...

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সুষ্ঠু বেতন কাঠামো তৈরি করতে সরকার কাজ করছে

4 views

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সুষ্ঠু বেতন কাঠামো তৈরি করতে সরকার কাজ করছে

ইমাম, খতিব এবং মুয়াজ্জিনদের আর্থিক সম্মান ও জীবিকা উন্নয়নের জন্য সরকার একটি সুষ্ঠু বেতন কাঠামো তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সম্প্রতি একটি কর্মশালায় এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইমাম-মুয়াজ্জিনরা সমাজের নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই তাদের জীবনের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

বর্তমানে দেশের অধিকাংশ মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। গ্রামের মসজিদগুলোতে তাদের মাসিক আয় অত্যন্ত কম। এটি তাদের জীবনের মানোন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দেশের ৯০ শতাংশ মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বেতন-ভাতা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহিত চাঁদার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার তাদের জন্য একটি মানসম্মত বেতন কাঠামো প্রণয়ন করতে উদ্যোগী হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই পরিকল্পনার আওতায় প্রথমে সরকারি ও আধাসরকারি মসজিদগুলোর ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য একটি ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হবে। এরপর তা ধীরে ধীরে দেশের সকল মসজিদে বাস্তবায়ন করা হবে। এতে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে এবং তারা আরও মনোযোগ দিয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন বলেন, “ইমাম ও মুয়াজ্জিনরা আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু আর্থিক অনিশ্চয়তা তাদের অনেকসময় তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে। সরকার তাদের জন্য একটি স্থায়ী বেতন কাঠামো তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন একটি প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে। এর আওতায়, প্রত্যেক মসজিদের আয় ও চাহিদার ভিত্তিতে বেতন কাঠামো নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য পেনশন সুবিধা এবং চিকিৎসা সহায়তা চালু করার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দেশের ধর্মীয় নেতারা। তবে তারা আশা করছেন যে, এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারি বাজেটের পাশাপাশি সমাজের দানশীল ব্যক্তিরাও এগিয়ে আসবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে ধর্মীয় শিক্ষার প্রচার-প্রসার এবং সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রথমত, দেশের সব মসজিদের জন্য একক বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা কঠিন হতে পারে। কারণ বিভিন্ন অঞ্চলের মসজিদগুলোর আর্থিক সামর্থ্য ভিন্ন। দ্বিতীয়ত, প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সরকার আশাবাদী যে, জনগণ ও দাতব্য সংস্থাগুলোর সহায়তায় এই পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই উদ্যোগ নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। তারা মনে করছেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সমাজে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ইমাম-মুয়াজ্জিনরা আর্থিক দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

সমাজে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এটি বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হলে সমাজে ধর্মীয় ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.