...

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্প: প্রভাব পড়ল বাংলাদেশসহ চারটি দেশে

8 views

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্প: প্রভাব পড়ল বাংলাদেশসহ চারটি দেশে

আজ সকালে (৭ জানুয়ারি, ২০২৫) তিব্বতে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যার রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.১। ভূমিকম্পটির প্রভাব বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও চীনের বেশ কয়েকটি এলাকায় অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তিব্বতের পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকা, যা একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।

ভূমিকম্পের প্রকৃতি ও তীব্রতা

আজ স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি ঘটে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.১, যা “মারাত্মক ভূমিকম্প” হিসেবে বিবেচিত হয়। ভূমিকম্পটি মাটি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে সংঘটিত হয়, যা এর প্রভাবকে আরও বেশি মারাত্মক করে তোলে। তিব্বতের পার্বত্য এলাকায় এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে, যেখানে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ধসে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে।

বাংলাদেশে অনুভূত প্রভাব

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং উত্তরের বেশ কয়েকটি এলাকায় ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। বিশেষ করে, সিলেট অঞ্চলে কম্পনের মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় অনেক মানুষ দ্রুত ঘরবাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন।

ঢাকার বেশ কিছু বহুতল ভবনে কম্পন অনুভূত হলে ভবনগুলো থেকে মানুষ দ্রুত নিচে নেমে আসেন। চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায়ও কম্পন টের পাওয়া যায়। তবে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে এই ভূমিকম্পে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

আন্তর্জাতিক প্রভাব

তিব্বতের নিকটবর্তী চীনের ইউনান প্রদেশ এবং ভুটানের পার্বত্য এলাকাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ভারতে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে কম্পন অনুভূত হয়েছে। ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং আসামের মানুষজন ভীত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।

মানুষের প্রতিক্রিয়া

ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পরপরই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেকে ভূমিকম্পের সময় নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

ঢাকার উত্তরা এলাকার এক বাসিন্দা জানান, “আমরা সকালের নাস্তা করছিলাম, হঠাৎ পুরো বিল্ডিং কাঁপতে শুরু করে। সবাই দ্রুত নিচে নেমে আসি। এটা খুব ভয়ের ছিল।”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রস্তুতি

ভূমিকম্পের ঘটনার পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সতর্কতা জারি করেছে। জনগণকে শান্ত থাকার এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস এবং অন্যান্য জরুরি সেবাগুলোকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশ একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। যদিও এ ধরনের ভূমিকম্প দেশের বড় ক্ষতি করে না, তবে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভবিষ্যতে প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশের ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুরনো ভবনগুলোতে ভূমিকম্প সহনশীলতা বাড়ানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

পাশাপাশি, স্কুল, কলেজ, অফিস এবং বাসাবাড়িতে ভূমিকম্পকালীন নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে নিয়মিত মহড়া চালানো যেতে পারে, যাতে সাধারণ মানুষ জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে সঠিকভাবে সাড়া দিতে হবে তা জানতে পারে।

উপসংহার

আজকের এই ভূমিকম্পের ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে পূর্বপ্রস্তুতি ও সচেতনতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোতে ভূমিকম্পের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী অবকাঠামো এবং জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।


আপনার ব্লগপোস্টের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে বিশেষ কোনো দিক যোগ করতে বলুন।

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.