...

বই বিতরণে দুঃখ প্রকাশ: শিক্ষার্থীদের আশাভঙ্গ এবং পরবর্তী পরিকল্পনা

5 views

বই বিতরণে দুঃখ প্রকাশ: শিক্ষার্থীদের আশাভঙ্গ এবং পরবর্তী পরিকল্পনা

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার প্রথা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। তবে ২০২৫ সালের বই বিতরণ কার্যক্রমে কিছু ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে। বছরের প্রথম দিনেই সকল শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় শিক্ষার উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

সমস্যা ও কারণ

প্রতিবছর জানুয়ারির ১ তারিখে ‘বই উৎসব’ আয়োজনের মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়া হয়। তবে এই বছর কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে সব শিক্ষার্থী সময়মতো বই পায়নি। বিশেষত গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোতে এবং দুর্বোধ্য এলাকাগুলোতে বই পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বেশি জটিলতা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বই মুদ্রণ ও সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কিছু বিলম্ব হয়েছে। সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটেছে কাগজের সংকট এবং পরিবহন সমস্যা থেকে। এছাড়া স্কুল পর্যায়ে বই গ্রহণ এবং বিতরণের সমন্বয়েও ঘাটতি ছিল।

শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া

বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা হতাশা প্রকাশ করেছে। বিশেষত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বই শিক্ষার প্রেরণা হয়ে ওঠে। বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই হাতে পাওয়ার আশায় থাকা শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়েছে। অনেক স্কুলে আংশিক বই বিতরণ হয়েছে, যা পাঠ্যসূচি শুরু করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।

একজন শিক্ষার্থী জানায়, “প্রতিবছর এই দিনে আমরা অনেক আনন্দ করি, নতুন বইয়ের গন্ধ পাই। এবার শুধু কভার পৃষ্ঠাটাই পেলাম, কিন্তু ভেতরের বই পাইনি।”

সরকারের দুঃখ প্রকাশ ও পরবর্তী পদক্ষেপ

জাতীয় শিক্ষার উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এই ঘটনার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এই অসুবিধা আমাদের জন্যও অপ্রত্যাশিত ছিল। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বই বিতরণ সম্পন্ন করতে।”

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব স্কুলে বাকি বই পৌঁছে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বই মুদ্রণ ও পরিবহনে আরও মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, মন্ত্রণালয় পরবর্তী বছরের জন্য বই মুদ্রণ ও বিতরণ ব্যবস্থায় আরও প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা করছে। কাগজের জোগান ও পরিবহন খাতে বাজেট বাড়ানো এবং মুদ্রণ প্রক্রিয়ায় অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষকদের ভূমিকা

বইয়ের অভাব থাকলেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব বাড়ছে। অনেক শিক্ষক নিজেদের উদ্যোগে পূর্ববর্তী বছরের বই এবং বিকল্প শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে পাঠদান শুরু করেছেন।

একজন শিক্ষক বলেন, “বই না থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছি। তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য আমরা বিকল্প উপায়ে পাঠদান করছি।”

উপসংহার

বই বিতরণ কার্যক্রমে এই সমস্যাটি সাময়িক হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য তা বড় একটি শিক্ষা ঘাটতি তৈরি করতে পারে। সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ এবং মুদ্রণ প্রক্রিয়া উন্নত করার প্রতিশ্রুতি আশা জাগিয়েছে। তবে এই ঘটনাটি শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে। বই বিতরণের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ব্যর্থতা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.