মধু সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সাধারণভাবে বলা যায় মধু হলো লাখ লাখ মৌমাছির অক্লান্ত শ্রম আর সেবাব্রতী জীবনের দান । মৌমাছিরা ফুলে ফুলে বিচরণ করে ফুলের রেণু ও মিষ্টি রস সংগ্রহ করে পাকস্থলিতে রাখে ।
তারপর সেখানে মৌমাছির মুখনিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় মধু তৈরি হয় । এরপর মুখে মৌচাকের প্রকোষ্ঠের জমা করা হয়। আরবি ভাষায় মধুপোকা মৌমাছি কেনা নাহল বলা হয়। পবিত্র কুরআনে এই নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা বিদ্যমান আছে।
মধু সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
সূরা নাহল আয়াত এ আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানি নির্গত হয় তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার । ।মধু হচ্ছে ঔষধ ও খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয় বীরে এলাহী তিব্বে নববী। অর্থাৎ চিকিৎসা ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিধানের অন্তর্ভুক্ত । সূরা মুহাম্মদ আয়াত.
আল্লাহ বলেছেন জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে। খাদ্য ও ঋতুর ভিন্নতার কারণে মধুর রং বিভিন্ন হয়ে থাকে । এ কারণেই কোনো বিশেষ অঞ্চলের কোন বিশেষ ফুল বা ফলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয় ।
মধু সাধারণত তরল আকারে থাকে্ । তাই একে পানীয় বলা হয়। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক। তেমনি রোগ ব্যাধির জন্য ফলদায়ক ব্যবস্থাপত্র । কেন হবেনা স্রষ্টার ভ্রাম্যমাণ মেশিন সর্বপ্রকার ফল ও ফুল থেকে বলকারক রহস অপবিত্র নির্যাস বের করে সুরক্ষিত গৃহের সঞ্চিত রাখে।
মধুর আরো একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য এই যে নিজেও নষ্ট হয় না এবং অন্যান্য বস্তুকে দীর্ঘকাল পর্যন্ত নষ্ট হতে দেয় না। এ কারণেই হাজার বছর ধরে চিকিৎসকরা একে অ্যালকোহল এর স্থলে ব্যবহার করে আসছে। পেট থেকে দূষিত পদার্থ অপসারক ।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কোনো এক সাহাবী তার ভাইয়ের অসুখের বিবরণ দিলে্ তিনি তাকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন । দ্বিতীয় দিনে এসে আবার সাহাবী বললেন অসুখ পূর্ববৎ বহাল রয়েছে। তিনি আবারও একই পরামর্শ দিলেন।
তৃতীয় দিনে যখন সংবাদে অসুখের কোন পার্থক্য হয়নি । তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আল্লাহর উক্তি নিঃসন্দেহে সত্য। তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যাবাদী ।উদ্দেশ্য এই যে ঔষধের কোন দোষ নেই রোগীর বিশেষ মেজাজের কারণেই ওষুধ দ্রুত কাজ করেনি।
এর পর রোগীকে আবার মধু পান করানো হয় এবং সে সুস্থ হয়ে ওঠে। মধুর নিরাময় শক্তি বিরাট ও স্বতন্ত্র ধরনের। কিছু সংখ্যক বুজুর্গ ব্যক্তি এমন রয়েছেন যারা মধু সর্ব রোগের প্রতিষেধক হওয়ার ব্যাপারে নিসন্দেহ । তারা ফুড়া ও চোখের চিকিৎসা ও মধুর মাধ্যমে করে থাকেন। দেহের অন্যান্য রোগের চিকিৎসা মধুর দ্বারাই করেন।
হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে আছে যে তার শরীরে ফোড়া বের হলেও তিনি তাতে মধুর প্রলেপ দিয়ে চিকিৎসা করতেন। এর কারণ জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেন আল্লাহ তাআলা কুরআনে কি বলেননি যে তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার ।
মধু সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সর্বশেষ
এই থেকেই বোঝা যায় মধু আল্লাহর দেয়া বিশেষ একটি নিয়ামত। এই বিশেষ নিয়ামত মধুকে আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে আমাদের জীবন ও স্বাস্থ্য সজল এবং সুন্দর রাখতে পারি। আজ এ পর্যন্তই সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আল্লাহ হাফেজ ।
আরও পড়ুন : সূর্যমুখীর বীজ খাওয়ার উপকারিতা । সূর্যমুখী বীজের যত গুণ