আজকের পোষ্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করব লিভার রোগের লক্ষন। যা দেখে আপনি এবং আপনার প্রিয় জন আগে থেকেই সাবধান হতে পারেন। শুরু করছি আজকের টপিক।
হজমে সহায়তা, কোলেস্টেরল, ও ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ, রক্ত পরিষ্কার রাখা, এবং হরমোন মেডিসিন ইত্যাদি নানা গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন পালন করে আপনার লিভার।
তাই এটি ঠিকমত কাজ না করলে শরীরে এমন কিছু লক্ষণ দেখা দেবে যা থেকে ধারণা করা সম্ভব লিভার দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
দেহে টক্সিন মাত্রা বেড়ে যাওয়া:
প্রতিদিনের খাবারের সাথে এবং তা হজম করতে গিয়ে আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে টক্সিন বা ক্ষতিকর কেমিক্যাল জমে যায়। লিভার থেকে নিঃসরিত বাইল অর্থাৎ পিত্তরসের কাজ হচ্ছে এই টক্সিক কেমিক্যাল গুলোকে ভেঙে ফেলা।
তাই লিভার ফাংশন দুর্বল হলে শরীরে টক্সিন এর মাত্রা বেড়ে যাবে । এর ফলে আপনি যে লক্ষণগুলো দেখবেন তা হল ত্বকে রেস, এলার্জি , চুলকানি ইত্যাদি বেড়ে যাওয়া।
মাসেল ব্রেইন ইস্যুতে টক্সিন জমে যাওয়ার ফলে কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া । তাই আপনি সম্ভবত ক্লান্তি বোধ করবেন ।
হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়া:
আমাদের লিভার ক্রমাগত পিত্তরস তৈরি করে । যা খাবারের ফ্যাট ও কোলেস্টেরল হজমে সহায়তা করে। তাই লিভারের রোগ দেখা দিলে আপনার স্বাভাবিক হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।
এর ফলে আপনার খাবারের অরুচি দেখা দেবে। সারাক্ষণ বমিভাব ফিল করবেন। খাবার হজম করার মতো পিত্তরস না থাকার জন্য আপনার শরীরে ফ্যাট জমে যাবে । রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাবে ।
হরমোন লেভেল এর পরিবর্তন:
লিভার আমাদের দেহে ৫০০ এর মত ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করে তার মধ্যে রয়েছে বেশকিছু হরমোন লেভেল নিয়ন্ত্রণ। তাই লিভার ফাংশন অসুবিধা হলে বেশ কিছু হরমোন উৎপাদন কম বেশি হয়ে যায়।
যেমন করটিসল উৎপাদন বেড়ে যাওয়া । এটি আমাদের শরীরের সারভাইভাল হরমোন তাই যে কোন সিরিয়াস অসুখ এই এটা বৃদ্ধি পায় । এর ফলে আপনার স্ট্রেস বেড়ে যায়। ব্লাড সুগার ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায় ।
টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়া:
লিভারের অসুখ সিরিয়াস পর্যায়ে চলে গেলে পুরুষ রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরের মাংসপেশি কমে গিয়ে ফ্যাট বেড়ে যাওয়া অর্থাৎ মেয়েদের মত মাসল মাস কমে যাওয়া শরীরের পশম পড়ে যাওয়া এবং স্তনের আকার বড় হয়ে যেতে পারে।
ইস্ট্রোজেন রেভেল বৃদ্বি:
সাধারণ অবস্থায় পুরুষের ত্বক শক্ত ও রুক্ষ থাকে কিন্তু ফিমেল হরমোন কমে গেলে সফট হয়ে যায় এবং বেলি ফ্যাট ফ্যাট বেড়ে যায়।
রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়া:
লিভারের অসুখ হলে আমাদের রক্তে প্লাটিলেট কাউন্ট কমে গিয়ে রক্ত পাতলা হয়ে পড়ে। এর ফলে কাটাছেঁড়ায় রক্ত সহজে বন্ধ হয় না।
হাতের তালু লাল হয়ে যায়। অল্প আঘাতেই চামড়ার নিচে কালশিটে পড়ে যায়। চামড়া নিজে আঘাত ছাড়াও মাকড়সার জালের মত রক্ত জমে থাকে।
পেটে পায়ে পানি জমে যাওয়া:
লিভারের অসুখে আক্রান্ত হলে ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীরে জমে থাকা পানির পরিমাণ বেড়ে যায়।
এছাড়া লিভার থেকে ফ্লুইড লিকেজ হয়ে আপনার পেটে পানি চলে আসতে পারে এবং পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে। এটি লিভারের অসুখের খুব সিরিয়াস পৌঁছালে হয়।
পেটে ব্যথা:
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হলে এবং অন্যান্য লিভার ইনফেকশনের কারণে লিভারে ফ্লোইট জমতে পারে এর থেকে লিভার স্বাভাবিক আকৃতির তুলনায় ফুলে যায় এবং এর থেকে শরীরের ডান পাঁজরের ঠিক নিচের অংশে ব্যথা শুরু হতে পারে ।
জন্ডিস:
লিভারে অশোকের খুব কমন একটা লক্ষ্য হচ্ছে জন্ডিস। আপনার ব্লাড থেকে বিলিরুবিন ফিল্টার করার দায়িত্ব আপনার লিভারের।
তাই এটি ঠিকমতো পালন না করতে পারলে শরীরে বিলিরুবিন জমে যায় এবং এর ফলে চোখ ও ত্বকের রং হলদে হয়ে আসে । এরই সাথে আপনার পায়খানার রং সাদা বা ধুসর হয়ে যায় ।
অর্থাৎ এই অসুখটি ধীরে ধীরে এমনকি ১০ বা ২০ বছর ধরে সিরিয়াস দিকে টান নাই। তার লিস্টে লিভারের অসুখ আইডেন্টিফাই করতে পারাটাই আপনার সুস্থ হয়ে ওঠার সবচেয়ে বেশি ।
লিভার রোগের লক্ষন
আশা করি আজকের পোষ্টটি পড়ার পর আপনি ও আপনার প্রয়োজন লিভার রোগের লক্ষন সম্পর্কে সতর্ক থাকতে পারবেন ।
ভালো লেগে থাকলে প্লিজ লাইক করুন এবং কমেন্ট করুন আর ফিটনেস নিয়ে আমাদের আরও পোষ্ট ভিজিট করুন ।