শীতের প্রকোপে দেশের ১৩ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ
বাংলাদেশে শীতকাল তার চিরাচরিত প্রকৃতির সাথে এসেছে, তবে এ বছর শীতের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। ২০২৫ সালের জানুয়ারির শুরুতেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে শুরু করে মধ্যাঞ্চলের কিছু অংশে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এর মধ্যে ১৩টি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
শৈত্যপ্রবাহের প্রধান অঞ্চল
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা যেমন পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, এবং রংপুরে তীব্র শীতের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, পাবনা, মাগুরা, এবং সাতক্ষীরায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে।
এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। বিশেষ করে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই মৌসুমের সবচেয়ে কম তাপমাত্রার একটি।
শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব
তীব্র শীতের কারণে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা কমে গেছে। কৃষি কাজ, বিশেষত ধানের মাঠে কাজ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে রোগীর চাপ বেড়েছে।
শীতবস্ত্রের সংকটও তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ তীব্র শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।
শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের উদ্যোগ
সরকারি প্রশাসন এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকায় কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শৈত্যপ্রবাহ আগামী কয়েকদিন স্থায়ী থাকতে পারে। এ সময় উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে।
করণীয়
বিশেষজ্ঞরা শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র ব্যবহার এবং শরীর উষ্ণ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। ঠাণ্ডা খাবার পরিহার করে গরম খাবার খাওয়া এবং ঘরের ভেতরে উষ্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করাও জরুরি। শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নিতে বলা হয়েছে।
শীতের প্রকোপ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে স্থানীয় প্রশাসন এবং নাগরিকদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি, আবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট থেকে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়াও জরুরি।