ইমাম বুখারীর সংক্ষিপ্ত জীবনী । Biography of Imam Al Bukhari

1,029 views

ইমাম বুখারীর পরিচয়

ইমাম বুখারীর জীবনী শিশুটির পুরো নাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল ইব্রাহিম ইবনে মুগীরা।  খোরাসান অঞ্চল বর্তমান সময়ের ইরান এবং আফগানিস্থান অধ্যুষিত এলাকা । মোহাম্মদ নামের ছোট্ট শিশুটির মাতৃভাষা ফাসি । তবে একই সাথে আরবি ভাষাতে উঠছে সমানভাবে পারদর্শী হয়ে ওঠেন  ।

জন্ম ও বংশ পরিচয়

খোরাসানের বুখারা নগরীতে জন্মগ্রহণ করে এক ফুটফুটে শিশু । যার নাম রাখা হয় মুহাম্মদ। শিশুটির পিতা ইসমাইল ছিলেন একজন বিজ্ঞ আলেম এবং মুহাদ্দিস। তার দাদার নাম ইব্রাহিম এবং দাদার পিতা মুগিরা ।  মুগিরা হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সাহাবাদের জীবন দশায় ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন ।

ইমাম বুখারীর শৈশব কাল

মাত্র তিন বছর বয়সে শিশুটি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং তার পিতাও ইন্তেকাল করেন। শিশুটির মা ছিলেন অত্যন্ত আল্লাহ ভীরু নেককার মহিলা হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন । তিন বছর বয়সে যখন তার সন্তান দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তখন তিনি আরও দৃঢ় চিত্তে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হয়ে যান।

রাতের পর রাত তিনি আল্লাহর ইবাদতের কাটিয়ে দেন। অনবরত দোয়া করতে থাকেন যেন আল্লাহ তার সন্তানের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন । এক রাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন ইব্রাহিম আলাইহিসালাম তার কাছে এসে বলছেন যে অমুক তোমার দোয়ার কল্যাণে আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা তোমার সন্তানের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এই স্বপ্নকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন স্বপ্ন কি সত্যি কিনা সেটা যাচাই করার জন্য তিনি দৌড়ে গিয়ে তার সন্তানের ঘুম ভাঙায়। দেখতে পান তার সন্তান সত্যি সত্যি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন। আল্লাহর বিশেষ রহমত প্রাপ্ত সেই শিশুটি আর কেউ নন তিনি হলেন ইমাম আল বোখারী রাহিমাহুল্লাহ।

এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় ইমাম বুখারীর মাতা কত বড় আবিদা ছিলেন এবং একই সাথে সন্তানের প্রতি মায়ের দোয়ার গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। ইমাম আল বুখারীর পিতা মারা যাওয়ার সময়ে অনেক ধন সম্পদ রেখে যান ফলে থাকে অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হয়নি। তার মা শিক্ষা-দীক্ষার সমস্ত ভার বহন করেন ।

জ্ঞান অর্জন

মাত্র ছয় বছর বয়সেই তিনি মুখস্ত করে ফেলেন। দশ বছর বয়স থেকেই বুখারা নগরীর প্রসিদ্ধ ইমাম দাখেলি রহিমাহুল্লাহ কাছে তিনি হাদিস শিখতে শুরু করেন। ঈমান দাখেলি একদিন একটি হাদিস পাঠ করছিলেন আর ১১ বছর বয়সেই আল-বুখারী সেখানে বসেছিলেন।

ঈমান দাখেলি এর সাথে ঘটনা

ঈমান দাখেলি হাদীসের বর্ণনাকারীদের নাম বলছিলেন অর্থাৎ হাদীসের সনদ ছিলেন উল্লেখ্য হাদিসের সনদে যে নামগুলো রয়েছে সেখানে সামান্য গরমিল থাকলে পুরো হাদিস অশুদ্ধ হয়ে যায়।

ঈমান দাখেলি বলতে শুরু করলেন সুফিয়ান ইব্রাহীম ইমাম বুখারী বলে উঠলেন সাহেব এখানে জুবাইর হবে আবু জুবায়ের নয় আবু জুবায়ের এর সাথে ইব্রাহিমের কখনো সাক্ষাৎ হয়নি। ঈমান দাখেলি বললেন সাক্ষাৎ না হলে হাদীসটি কিভাবে এল তুমি কি বলছো।

তুমি কি জানো এখানে আবু জুবায়ের ই হবে ইমাম বুখারী আবারও বললেন না আসায় জুবাইর হবে আবু জুবায়ের নয় আপনি দয়া করে আপনার হাদিসের নোটবুক চেক করুন। ১১ বছরের এক শিশু বারবার একই কথা বলে যাওয়ায় ঈমান দাখেলি একটু অসন্তুষ্ট হলেন ।

তিনি তার সংগ্রহশালায় গিয়ে নোটবুক থেকে খুঁজে খুঁজে হাদীসটি বের করলেন এবং আশ্চর্য হয়ে দেখলেন হাদিসের সনদে সত্যিই শুধুমাত্র জুবায়ের উল্লেখ রয়েছে। আবু জুবায়ের নয় এরপর তিনি হাসতে হাসতে ঘর থেকে বের হয়ে এলেন এবং ছোট্ট বুখারিকে রেখে বললেন হে আমার প্রিয় তুমি সত্যি বলেছো তোমার ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। একদিন তুমি অনেক উচ্চ মাকাম এ পৌঁছাবে ।

ইমাম বুখারীর হজ যাএা

১৬ বছর বয়সে ইমাম বুখারী তার মা এবং ভাইয়ের সাথে হজ করতে যান । ওই সময়ে সারা বিশ্ব থেকে বড় বড় সব মহা হাদীসরা মক্কায় উপস্থিত হতেন

যাতায়াত সহজসাধ্য না হওয়ায় অনেকটা সময় তারা সেখানে অতিবাহিত করতেন। ফলে মক্কায় জ্ঞান বিতরণের মেলা বসতো। ১৬ বছর বয়সী ইমাম আল বুখারী মক্কার এই অবস্থা দেখে আশ্চর্যান্বিত হয়ে যান। নিজের জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ করার জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে ওঠেন।

তাই হজ শেষে মা এবং ভাই কি বললেন তোমরা বুখারায় ফিরে যাও আমি এখানেই থাকব। তার মা একথায় সম্মতি জানালেন এবং প্রাণ ভরে থাকে দোয়া করে বুখারায় ফিরে গেলেন । এরপর থেকে ইমাম আল বুখারী স্থায়ীভাবে আর কখনোই বুখারায় ফিরে যাননি।

হাদিস শাস্ত্রে তার অবদান

মক্কায় পৃথিবী বিখ্যাত আলেমদের সান্নিধ্য থেকে হাদিস শিক্ষা গ্রহণ করতে থাকেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি সর্বপ্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ বই লিখে ফেলেন।

পূর্বে শুধুমাত্র সহি হাদিস গুলো কে একত্রিত করে কোন গ্রন্থ রচনা করা হয়নি। আলেমগণ সহীহ মুসলিম দেশগুলোকে একসাথেই লিখতেন রাখ বাড়ি তার ছাত্রদের শিক্ষা দানের সময় হঠাৎ একদিন বললেন তোমাদের মধ্যে কেউ যদি হাদিসের এমন একটি গ্রন্থ রচনা করো যাতে শুধুমাত্র সহি হাদিস গুলো থাকবে তাহলে কতই না ভালো হতো।

এই কথাটি ইমাম বুখারীর হৃদয় ছুঁয়ে গেল এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন শুধুমাত্র সহি হাদিস গুলো সংরক্ষণ করবেন ।

ইমাম বুখারীর বাগদাদে আগমণ

হাদিস সংগ্রহের জন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। ২০ বছর বয়সে তিনি বাগদাদ সফর করেন । সেই সময়ে বাগদাদ ইসলামের একজন বড় স্কলার অবস্থান করতেন। তিনি হলেন ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রাহিমাহুল্লাহ তার কাছ থেকেও ইমাম আল বোখারী শিক্ষা গ্রহণ করেন।

পৃথিবীর অন্যতম সেরা মুহাদ্দিস আহমাদ ইবনে হাম্বল বুখারী সম্পর্কে বলেন আমি আমার জীবনে সমগ্র খোরাসান অঞ্চলে মোহাম্মদ ইসমাইল এর মত আর কাউকে দেখিনি ।

মাত্র ২০ বছর বয়সী এক তরুণ কে উদ্দেশ্য করে জগদ্বিখ্যাত স্কলার ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল এর মন্তব্য করেছিলেন। ইমাম বুখারীর ফটোগ্রাফিক মেমোরি ছিল। তিনি এই বিরল ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন যে হাদিসে তিনি একবার চোখ বোলাতেই সেটি আর কখনোই ভুলবেন না।

স্মরণ শক্তির পরীক্ষা

যে পৃষ্ঠা তিনি একবার দেখতেন সেটি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হুবহু তার মস্তিষ্কে রয়েছে। তৎকালীন সময়ের অনেক বড় বড় স্কলাররা ফটোগ্রাফিক মেমোরির এই বিষয়টি সহজে বিশ্বাস করতে পারতেন না । এ কারণে ইমাম বুখারীকে জীবনে বহুবার জনসম্মুখে স্মৃতি শক্তির পরীক্ষা দিতে হয়েছে।

একটি ঘটনাবহুল ভাবে আলোচিত তার বয়স তিরিশের কোঠায় পৌঁছালে তিনি আবারো ভ্রমণে আসেন ততদিনে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল ইন্তেকাল করেছেন ।

এবং ইমাম বুখারীর নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। মাত্র ৩০ বছর বয়সে তিনি এত সুনাম এবং মান মর্যাদা অর্জন করেছিলেন যেটি কল্পনাই করা যায় না।   তারা একটি টেস্ট করতে চাইলেন ইমাম বুখারীর সম্মতি জানালেন তাদের জাতীয় মসজিদে একটি পরীক্ষার আয়োজন করা হলো। 

স্থির করা হলো যে দশজন স্কলার প্রত্যেকে ১০ টি করে সর্বমোট ১০০ টি হাদিস বর্ণনা করবে কিন্তু হাদীসের সনদ এবং মতন ওলট-পালট করে দেয়া হবে।

কিন্তু যাদের মাধ্যমে এই হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে সেই বর্ণনাকারীরা ও স্কলারদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ বর্ণনাকারী যদি পাল্টে যায় তবে সেটিকে একটি নতুন হাদীস হিসেবে ধরা হয় ।

তাদের গ্র্যান্ড মসজিদে স্কলাররা এক এক করে হাদিস বলতে শুরু করলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা বললো হ্যাঁ আমরা এই হাদিস শুনেছি । কিন্তু ইমাম বুখারী বললেন না আমি হাদিস কখনো শুনি নি ।

ইমাম বুখারীর ও চোরের ঘটনা

একবার তিনি একটি থলির ভেতর ১০০০০ দিনের নিয়ে হাদিস অন্বেষণের সফরে বের হলেন। তখনকার ১০০০০ ডিনারের মূল্য বর্তমান সময়ের মিলিয়ন ডলার সমান। স্বর্ণমুদ্রাগুলো দেখে ফেলে এবং চুরি করার জন্য ইমাম বুখারীর পেছনে.

কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও সে সফল হতে পারছিল না । পথিমধ্যে ইমাম বুখারী জাহাজে আরোহন করলে তার সাথে যাত্রা শুরু করে । সেখানেও সে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর চোর একটি কৌশল অবলম্বন করে

সে চিৎকার করে বলে এই জাহাজে উঠার পর আমার ১০০০০ দিনের চুরি হয়ে গেছে মুদ্রাগুলো একটি থলের ভেতর ছিলো। থলিটি দেখতে কেমন ছিল সেটি হচ্ছে বর্ণনা করলো কারণ ইতোপূর্বেই সেই বাপের কাছে থলিতে দেখেছিল ।

চিৎকার এবং কান্নাকাটির মাধ্যমে চোরটি জাহাজ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। কাজেই তারা একেক করে সকল যাত্রীকে চেক করা শুরু করল এ দৃশ্য দেখে ইমাম বুখারী চিন্তায় পড়ে গেলেন।

চোরের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তিনি ভাবলেন এখন যদি আমাকে তল্লাশি করা হয় তাহলে তো আমার কাছেই মুদ্রাগুলো পাওয়া যাবে। আর আমি চোর সাব্যস্ত হবে। আমি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আমার কথাই কেউই কর্ণপাত করবেনা।

আর আমি যদি আজ চোর হিসেবে ধরা পড়ি তাহলে সারা দুনিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়বে।  তখন তো আবার সারা জীবনের সাধনা ব্যর্থ হবে আমি যে সমস্ত হাদিস সংগ্রহ করেছি তাহলে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে ।

এই কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি ১০০০০ দিনার মায়া ত্যাগ করে রাসুলের হাদীসের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন । তাই তল্লাশ কারীগণ তার শরীরে তল্লাশি চালানোর আগেই অতি গোপনে মুদ্রা পানিতে ফেলে দিলেন ।

এরপর সকলের মালপত্র এবং শরীর তল্লাশির এক পর্যায়ে ইমাম বুখারীর শরীরে তল্লাশি করা হলো কিন্তু জাহাজের কারো কাছেই এত পরিমাণে পাওয়া গেলোনা পরিশেষে জাহাজের লোকেরা চোরকেই মিথ্যেবাদী সাব্যস্ত করল ।

এরপর ওই চোর তার সাথে একান্তে মিলিত হয়ে বলল আমি জানি । আপনি ওই স্বর্ণমুদ্রার মালিক কিন্তু ওগুলো কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন। উত্তরে তিনি বললেন তোমার চক্রান্ত বুঝতে পেরে আমি তা পানিতে ফেলে দিয়েছি।

আশ্চর্য হয়ে বলল বলে দিচ্ছি এতো গুলো দিনার আগে পানিতে ফেলে দিলেন। আমি চুরি করলে তো অন্তত আমার উপকারে আসতো। এখন তো আর কেউ উপকৃত হবে না এবং বুখারী বললেন রাসূলের হাদীস সংরক্ষণের আমি আমার সারা জীবন উৎসর্গ করেছি।

আর যদি আমার নামে কোন অপবাদ দেয়া হতো তাহলে আমার সংরক্ষণে থাকা হাদীসগুলো মানুষ মিথ্যা প্রতিপন্ন করত। হাদিসের অমর্যাদা করা হতো এটা আমি হতে দিবোনা রাসুলের হাদিস এর কাছে ১০ হাজার দিনের মূল্যহীন।

ইমাম বুখারীর স্বপ্ন

এছাড়াও যুবক বয়সে ইমাম বুখারীর স্বপ্ন দেখেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং তার দিকে কতগুলো মাছি এগিয়ে আসছে ।

আর ইমাম বুখারী মাছিগুলোকে তাড়িয়ে দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামকে নিরাপত্তা দিচ্ছেন । দেখার পর শিক্ষকদের কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাইলেন তারা বললেন তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু বানোয়াট হাদিস থেকে রক্ষা করবে। 

সহি বুখারী গ্রন্থটি রচনা

পরবর্তী ১৬ বছরের অক্লান্ত চেষ্টায় পরিশ্রমের মাধ্যমে সহি বুখারী গ্রন্থটি রচনা করেন। বেশি হাদিস তার মুখস্থ ছিল এর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই শেষে মাত্র ৭ হাজার হাদিস গ্রন্থে স্থান পায় যে হাদীসগুলো বিশুদ্ধতার সর্বোচ্চ মানদন্ডে উন্নীত।

বইটি লেখার উদ্দেশ্যে তিনি মদিনায় চলে যান। আরো কয়েক বছর ধরে লিপিবদ্ধ হাদীসগুলোকে তিনি বহুবার যাচাই বাছাই করেন। প্রতিটি হাদিস লেখার পূর্বে গোসল করে মসজিদে নববীতে দুই রাকাত পড়েছেন ইস্তেখারা করেছেন ।

কোন হাদিস সম্পর্কে যদি তার মনে সামান্য পরিমাণ সন্দেহ থাকত তাহলে সকল শর্ত মোতাবেক সহি হলেও ওই হাদীসটিকে তিনি তার গ্রন্থে লিখিন নি । ১৬ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই সহীহ বুখারী গ্রন্থটি । 

ইমাম বুখারীর দানশীলতা

ইমাম বুখারী পত্রিক ভাবে প্রচুর ধন সম্পদের মালিক ছিলেন। কিন্তু এর খুব সামান্য অংশই তিনি নিজের ব্যক্তিগত কাজে খরচ করতেন। অতি সাধারন ভাবেই তিনি জীবনযাপন করতেন। সীমিত খাদ্য গ্রহণ করতেন ।

সামান্য খরচের পর যে বিশাল অর্থ অবশিষ্ট থাকত তার সম্পূর্ণটাই দ্বীনি ইলম অর্জনের পথে খরচ করতেন । অভাবীদের অভাব পূরণে ব্যয় করতেন। তিনি সবসময়ই  দিরহামের থলের সাথে রাখতেন । মুহাদ্দিসদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন তাদের কেউ তিনি প্রচুর পরিমাণ দান করতেন ।

ইমাম বুখারীর কঠিন পরীক্ষা

কিছুদিন পর সন্তানদেরকে সহি বুখারীর হাদিস গুলো পড়ানোর জন্য কাছে প্রস্তাব করলো আবারও প্রস্তাব করলো যে তার সন্তানদেরকে পড়ানোর জন্য ইমাম বুখারীকে রাজদরবারে আসতে হবে। কারণ সাধারন জনগনের সাথে মসজিদে বসে আমিরের ছেলেদের পক্ষে সহি বুখারী পড়া সম্ভব নয়।

সাধারণ লোকদেরকে আলাদাভাবে আবিরের ছেলেদের পড়া ঢুকে হাদিসের জন্য বিরাট অবমাননাকরভাবে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন আমি যদি সত্যিকার অর্থেই এই হাদীসের প্রতি অনুরাগী হন তাহলে তিনি যেন তার সন্তানদেরকে নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হন।

এ ঘটনায় প্রতি অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে গেল ফতোয়া জারি করতে লাগল আর বলল এবং বুখারী এসব ফতোয়া দিচ্ছে বোখারার কিছু মানুষ আমিরের কথাই  তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হলো ।

এই ঘটনায় তিনি মারাত্মকভাবে হতাশ হন প্রচন্ড কষ্ট থেকে বের হওয়ার সময় তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেন আল্লাহ যেন আমাকে অপমান করে বের করে দিয়েছে তুমি তাদেরকে এগুলো ফিরিয়ে দিও ।

আরও পড়ুন : হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী । Biography of Prophet Muhammad

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment