আপনার কী কিডনি আছে? কিডনি থাকলে সমস্যা আছে। চলুন দেখি কিডনিতে সমস্যা আছে কিনা। তার আগে জেনে নেই কিডনি কী ।
কিডনি কী ?
কিডনি আসলে শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ প্রতিটি মানুষের শরীরে দুটি কিডনি থাকে । এটি আমি না বললেও আপনি জানেন ।
কিডনির কাজ কী?
কিডনি আসলে শরীরে যে রক্ত থাকে সেটি ফিল্টারিং করে মূত্র তৈরি করে। এছাড়া আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পানি এবং বর্জ্যপদার্থ যেতে থাকে সেটি বের করে দেয় কিডনি। আমরা যে খাবার খাই সেটি থেকে লবণ এবং খনিজ পদার্থ রক্তে মিশে যেতে সহায়তা করে কিডনি।
এছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হাড়ের গঠন মজবুত রাখা এবং নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে কিডনি। এখন ভাবুন কিডনি ঠিক মত কাজ না করে কি হবে? যেসব কাজের কথা বললাম এগুলো ব্যাহত হবে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ । Symptoms of Dengue Fever
কিডনিতে কী কী সমস্যা হয়
কিডনি ফেইলর এটা তো আমরা সবাই শুনেছে কিডনে ফেলার কথা । তবে এর আরেকটি নাম আছে সেটি হচ্ছে ক্রনিক কিডনি ডিজেস। একে সিক্রেট ইউ বলা হয়ে থাকে ।
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ হচ্ছে কিডনির এমন একটি অবস্থা যখন কিডনির দীর্ঘমেয়াদে ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। সব বয়সী মানুষের মধ্যে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ দেখা যায়। তবে যারা একটু বয়স্ক তাদের মধ্যে এই আশঙ্কায় একটু বেশি থাকে।
ক্রনিক কিডনি ডিজিস লক্ষন
ক্লান্তি অনুভব করা ।
শ্বাস কষ্ট হওয়া ।
পায়ের গোড়ালি বা হাত ফুলে যাওয়া ।
অসুস্থতা বোধ করা ।
সবশেষে প্রস্রাবের সাথে রক্ত পড়া।
এসব উপসর্গ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। যারা মূএাশয় সংক্রমণে ভোগেন তাদের মধ্যে কিডনিতে সংক্রমনের আশংকা অনেক বেশি থাকে।
তবে তার মানে এই নয় যে আপনি যদি মূত্রশয় সংক্রমণ ভোগেন। তাহলে আপনার অবশ্যই কিডনিতে সংক্রমণ হবে এটি তখনই হয় যখন ব্যাকটেরিয়া মূত্রাশয় থেকে কিডনি পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
যদি একবার কিডনিতে ব্যাকটেরিয়া পৌঁছে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে কিডনিতে সংক্রমণ হয় তাছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
কিডনি রোগের লক্ষণ
জ্বর জ্বর ভাব বা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।
অসুস্থতা বোধ করা।
শরীরের পেছনের দিকে ব্যথা করা।
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া বা দুর্গন্ধ হওয়া।
এসব উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । কিডনি শুনলে প্রথমে যে রোগটির কথা মনে আছে সেটি মনে হয় কিডনিতে পাথর হওয়ার বিষয়টি।
আমাদের দেশে এত বেশি দেখা যায় যে প্রতি ১০ জনের অন্তত একজনের মধ্যে কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে। কিডনিতে যদি পাথর হয় তাহলে তিনটে উপসর্গ অবশ্যই থাকবে।
আরও পড়ুন: কী খেলে আলসার ভাল হয়। ঘরোয়া প্রতিকার
তার মধ্যে একটি হচ্ছে তলপেটের একপাশে ব্যথা, থেমে থেমে তীব্র ব্যথা অনুভব করা এবং অসুস্থতা বোধ করা আর সেইসাথে বমি। এই লক্ষণগুলোর সাথে যদি শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয় কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে প্রসাবের সাথে রক্ত পড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
কিডনি রোগের প্রতিকার
কিডনিকে ভালো রাখতে চান তাহলে জীবনযাত্রায় পাঁচটি পরিবর্তন নিয়ে আসুন ।
বেশি বেশি তরল খেতে হবে: প্রথম পরিবর্তন বেশি বেশি তরল খেতে হবে। বেশি বেশি তরল খেলে কিডনি ঠিকমত কাজ করার সুযোগ পায়। পস্রাব সবসময় সাধারন রঙের হতে হবে যদি এই রং গারো হয়ে যায় বা লাল হয়ে যায় তখন বুঝতে হবে যে শরীরে তরলের পরিমাণ কমে গেছে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান: স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং পরিমিত স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার শরীরের সব ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান এর যোগান দেয়। অতিরিক্ত লবণ এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: মস্তিষ্ক ভালো রাখার উপায়-How To Increase Brain Power
নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করুন: নিয়মিত পরীক্ষা করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে কারণ অতিরিক্ত রক্তচাপ কিডনি এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
পরিহার করুন: পরিহার করুন এবং আপনি যদি নিয়ে থাকেন তাহলে অ্যালকোহল পরিত্যাগ করতে হবে। অথবা এর মাত্রা কমিয়ে দিতে হবে ।
স্লিম থাকুন : পাঁচ নম্বর কিডনি ভালো রাখতে স্লিম থাকুন। শরীরের অতিরিক্ত ওজন উচ্চরক্তচাপের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় । উচ্চরক্তচাপ কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই খবার পরিমিত মাত্রায় এবং শরীরচর্চা করে শরীরের ওজন কম রাখুন। কিডনিকেও ভালো রাখুন আপনিও ভালো থাকুন
ধন্যবাদ
আরও পড়ুন: কোন কিছু মনে না থাকার কারণ কি-কি খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
1 thought on “কিডনির কাজ । কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার”