মস্তিষ্ক মানুষের চিন্তা, অনুভব, কাজ সবকিছুকেই প্রভাবিত করে সাথে সংরক্ষিত রাখে সব স্মৃতিসমূহ। কিন্তু কিছু কিছু রোগ এই মস্তিষ্ককে ঠিকমতো কাজ করা থেকে বিরত রাখে । যেমন কিছু মনে না থাকা চিন্তাশক্তিও যথার্থ কথা বলা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়া।
এমন কিছু বলা যায় অন্যদের কাছে অদ্ভুত বলে মনে হবে। ধীরে ধীরে মানুষদের মধ্যে সব মানুষই এবং দৈনন্দিন কাজের পরিবর্তন সাধিত হলে। সে সমস্যাগুলোকে চিকিৎসকগণ ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট বলে চিহ্নিত করে থাকেন।
মস্তিষ্কের অনেক অসুখ এর একটি উপসর্গ হলো এই ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়ায়। তবে এই রোগটি নিয়ে যে প্রচলিত ভুল ধারণা টি আছে। সেটি হল বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডিমেনশিয়া হয়ে থাকে। বরং বিভিন্ন রোগের কারণে হয়ে থাকে।
এই ডিমেনশিয়া রোগটি মস্তিষ্কের ভিন্ন ভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করার সাথে সাথে রোগীদেরকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে থাকে। কি করে বুঝবেন যে, কেউ ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত কেউ? এ রোগে আক্রান্ত হলে তার মধ্যে ধীরে ধীরে কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করে।
যেমন অল্প সময়ের মধ্যে একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করা। মনোযোগ কিংবা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হয়ে ওঠে । এমনকি অনুভূতির পরিবর্তন হওয়া থেকে শুরু করে সহজে বিমর্ষ বা মর্মাহত হয়ে পড়া। চিকিৎসকদের মতে বংশগত কারণ ছাড়াও বারবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে, মস্তিষ্কে কোনো সংক্রমণ ঘটে, এমনকি ভিটামিনের অভাবে ও ডিমেনশিয়া দেখা দিতে পারে ।
১৯০৬ সালে প্রথম ডিমেনশিয়ার কথা জানা যায় আলওয়েশ আলজাইমার নামের একজন জার্মান চিকিৎসকের কাছ থেকে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই ডিমেনশিয়া রোগের কারণে ২০০০ সালের পর থেকে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণ।
এমনকি সারা বিশ্বে বর্তমানে যেসব অসুখ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে তার তালিকায় ডিমেনশিয়ার অবস্থান ৫ নম্বর। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ জনের মত মানুষের ডিমেনশিয়া রোগ দেখা দেয়।
পুরুষদের চেয়ে নারীদের মধ্যে এর প্রবণতা সবথেকে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। মূলত ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক দের ক্ষেত্রে রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি । যারা ডায়াবেটিস উচ্চরক্তচাপ কিংবা উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল এর মতো সমস্যায় ভোগে মূলত তাদের ডিমেনশিয়া রোগ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তবে একবারে রোগে আক্রান্ত হলে সময়ের সাথে সাথে রোগীদের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।