...

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকা যা হাড় ও দাতকে ভাল রাখবে

206 views

একজন মানুষের সারাদিনে ১০০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন হয় । একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ যদি এই পরিমাণ ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার প্রতিদিন গ্রহন না করেন। তাহলে তার শারীরিক সমস্যা গুলো দেখা দেয়। 

ক্যালসিয়াম একটি প্রয়োজনীয় খনিজ যা শক্তিশালী হাড় এবং দাঁত এর জন্য । পাশাপাশি অন্যান্য অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু খাবার রয়েছে যা ক্যালসিয়ামের জন্য ভাল উৎস ।

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার অভাবে যা হয়

হাড় জয়েন্ট, কোমরের ব্যথা, ঘাড়ের ব্যথা, পিঠের ব্যথা, হাঁটুর ব্যথা এই ব্যথাগুলো আপনি প্রথমে ভুগতে থাকবেন। চুল ঝরে যাওয়া, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা। এছাড়াও আপনার ক্লান্তি, দুর্বলতা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া ঘুম ভালো না হওয়া। 

বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় পড়বেন একের পর এক ক্যালসিয়ামের অভাবে। আর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়বে এবং যার জন্য সারা জীবন আপনি ভুগবেন তাহলে আপনার হাড় ক্ষয় রোগ ।

হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার অভাবের কারণে। আর হাড় ক্ষয় রোগ একবার হলে আপনি পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন ।

এই কারণে আজকের ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার পোষ্টটি বিশেষ ভাবে বানানো হয়েছে খুব সহজ কয়েকটি খাবারের নাম বলব কিন্তু এই খাবার গুলোতে ক্যালসিয়াম সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে। আর খুব সহজলভ্য। 

যারা গ্রামে আছেন তারাও খুব সহজে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার যেমন সংগ্রহ করতে পারবেন। আবার যারা শহরে থাকেন তারাও সংগ্রহ করতে পারবেন। খুব অল্প মূল্যে কাজেই খাবার গুলো কি কি এবং কোন নিয়মে খেতে হবে ভালো করে জেনে নিন ।

হয়তো এই খাবারগুলো আপনি খাচ্ছেন কিন্তু ওই কথা হল যে সঠিক নিয়মে না খাওয়ার কারণে খাবার আপনার দেহে কোন কাজেই লাগে না।

টক দই

আপনাকে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার রাখতে হবে।  আর তা পূর্ণ মাত্রায় । কাজেই আপনি এই খাবারগুলো আজ থেকে খাওয়া শুরু করতে পারেন। কোন কোন খাবার খাবে না কখন খাবেন প্রথমেই যে সহজ খাবারটির কথা বলব তা হল টক দই ।

টক দই অনেকেই ঠান্ডার শত্রু বলে মনে করেন। ঠান্ডা  বা কফ কাশি জনিত রোগ থাকলে টক দই খাওয়া যাবেনা।  আপনার কফ-কাশি বা অ্যালার্জি হতে পারে এই সব কিছুই কিন্তু টক দই খাওয়ার কারণে কমে যেতে পারে।

টক দই খেলে এইসব রোগ দূর হয়ে যেতে পারে ।শুধুমাত্র আপনাকে খাওয়ার সঠিক সময় এবং নিয়মটা মানতে হবে । কতটুকু পরিমান খাচ্ছেন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

টকদই প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে মাত্র এক কাপ ক্যালসিয়ামের পরিমাণ রয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ মিলিগ্রাম এর কাছাকাছি। এক কাপ টক দই খাওয়ার কারণে ।

টক দই আপনি কিভাবে খাবেন?

টক দই খেলে আপনার কোন ক্ষতি হবে না যারা হৃদ রোগে ভুগছেন একবার স্ট্রোক হয়ে গেছে বা হাই ব্লাড প্রেসার হাই কোলেস্টরেল রয়েছে তারা অবশ্যই টক দই খাবেন ।

শুধুমাত্র দই বানানোর আগে দুধ জ্বাল করে ঠান্ডা করে উপর থেকে সর ফেলে দিন । এই দুধ দিয়ে আপনি দই প্রস্তুত করে খাওয়া শুরু করুন। বাড়িতে দই এর বীজ দিয়ে অর্থাৎ পুরাতন সামান্য একটু দই মিশিয়ে ঘরে টক দই তৈরি করুন।

যেকোন একটা পাত্রে হালকা গরম দুধ রেখে তাতে সামান্য পরিমাণ দইয়ের বীজ দিয়ে ঢেকে রেখে দিন ৮ থেকে ৯ ঘণ্টার মধ্যেই হয়ে যাবে। এই দইটা আপনি খাবেন দুপুর  আবার আপনি সকাল এবং দুপুরের খাবারের মাঝের সময়ে টক দই টা খেতে পারেন।

এটাও খুব ভালো সময় কিন্তু কখনোই সন্ধার পরে টক দই খাবেন না । খালি পেটে অর্থাৎ ফাস্ট মিলে কখনো টক দই খাবেন না। 

টকদই সঙ্গে কি খাবেন টক দইয়ের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ সৌন্ধব লবণ এবং সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে খান । এই টকদই আপনি সামান্য মুড়ি যুক্ত করেও খেতে পারেন।

কিন্তু কখনই ভারী খাবারের সঙ্গে সঙ্গে টক দই খাবেন না । দুপুরের খাবারের সাথে সাথেই যারা টক দই খান তাদের বলবো ভুল করছেন এবং ভুল ভাবে খাওয়ার কারণে আপনার টক দই খেলে পরে হয়তো অসুবিধা দেখা দিচ্ছে।

শরীরে যদি অসুবিধা না হয় তবুও বলবো আয়ুর্বেদ বলছে দুপুরের খাবার বা যে কোনো ভারী খাবারের পর পর টক দই খেলে আপনার দেহের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।  প্রথম সমস্যা হলো আপনার হজমের সমস্যা হবে ।

এই হল টক দই খাওয়ার নিয়ম কিন্তু ভুলেও কখনো ফ্রিজে রাখা টক দই খাবেন না । এরপর একটি বীজ বা ডালের এর নাম।

রাজমা

রাজমা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এটা টক দইয়ের চেয়েও দেড়গুন বেশি। বুঝতেই পারছেন কি পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাবেন।  রাজমা কে ভিজিয়ে রাখুন তারপর এর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে যেকোন উপায়ে খুব সহজে রান্না করে খেয়ে নিন।

রাজমা অবশ্যই পূর্ণ সেদ্ধ করে খাবেন কাঁচা বা আধা সেদ্ধ রাজমা দেহের জন্য ক্ষতিকর । রাজমা আপনি ১০০ গ্রাম পরিমাণ খেতে পারেন। কাঁচা রাজমা ১০০ গ্রাম পরিমাণ একজন রান্না করে খেলেই তার ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

বিশেষ করে যারা নিরামিষ খান তাদের জন্য টক দই রাজমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কাল বা লাল টাই বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ।

তিল

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার অভাব পূরণ করার জন্য তিল কে কে খাচ্ছেন খাচ্ছেন । যারা নিয়মিত খান না আজ থেকে খাওয়া শুরু করুন । যদিও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ সবচেয়ে বেশি তা হল কালো তিল ।

তিল খোসা ছাড়িয়ে খেতে পারেন অথবা সাদা তিল খেতে পারেন । এই তিলমাত্র ১চা-চামচ খেলেই আপনি পাচ্ছেন অষ্টআশি থেকে ৮৯ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যালসিয়াম।

যা আপনার সারাদিনের অন্যান্য ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবারের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। আপনি খুব ভালো করে চিবিয়ে চিবিয়ে খাবেন ।

রাতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন অথবা আপনি সকালে খেতে পারেন। কিংবা আপনি যেকোন সময় স্ন্যাকসের সাথে বিকেলবেলা খেতে পারেন। তবে ভালো কোন খাবারের সাথে তিন খাবেন না ।

বরং দুধ হালকা খাবারের সঙ্গে তিল খান । এটি দেহের জন্য খুব উপকারী।

সজনে পাতা

পরের খাবারটি হলো সজনে পাতা । সজনে পাতা কোন নিয়মে খেলে ক্যালসিয়াম অক্ষুন্ন থাকে অর্থাৎ সজনে পাতা গাছ থেকে ভালো করে নিয়ে একে ধুয়ে নিন এর শক্ত ডাটাগুলো ছাড়িয়ে নিন। 

এরপর এটাকে রোদে একদম মচমচে করে শুকিয়ে কাঁচের জারে ভরে রেখে দিন টানা দুই মাস খেতে পারবেন যদি পানি না লাগান । পানি ভেজা চামচ নালা গান তাহলে দুই মাসেই গুণসমৃদ্ধ থাকবে ।

আপনি জাস্ট এক চামচ করে নেবেন আর সকাল বেলায় হালকা এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে খেয়ে নেবেন । এটা খাবারের সাথেও খেতে পারেন অথবা খাবারের এক ঘণ্টা পরেও খেতে পারেন। 

তবে খালি পেটে যদি খেতে চান তাহলে তার আধাঘন্টা আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে হালকা গরম পানি খাবেন। একদম খালি পেটে খেলে গ্যাস বেড়ে যাবে উল্টো ফল হবে।

এছাড়া যদি আপনি সঠিক নিয়মে খাবারের সঙ্গে বা খাবারের একটু পরে বা খালি পেটে পানি খাওয়ার পরে তাহলে দেখবেন যে আপনার গ্যাস কমতে থাকবে ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে আর ক্যালসিয়ামের অভাব তো অবশ্যই পূরণ হবে । এতে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে তা বলা হয় যে প্রাকৃতিক যত ধরনের ক্যালসিয়াম রয়েছে তাতে সজনে পাতা ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি আছে। যে কথাটি বলবো তাহলে পালং শাক

পালং শাক

পালং শাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে ।আর এই সময়ে পালংশাক আপনার হাতের কাছেই রয়েছে । খুব সস্তায় পালংশাক কিনুন অথবা বাড়িতে চাষ করুন পালংশাক প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করুন ।

যাদের ইউরিক এসিড বেশি নেই যাদের কিডনির সমস্যা নেই এবং পালং শাক খাওয়ার কারণে যাদের ডায়রিয়া হয় না বা কোন ধরনের অ্যালার্জির সমস্যা হয়না তারা নিশ্চিন্তে পালংশাক খান।

প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম পরিমাণ। এতে আপনার বহুদিনের পুরনো ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করতে পারবেন। শুধু একটি কথা খেয়াল রাখবেন পালংশাক কখনো ভুলেও দ্বিতীয়বার গরম করে খাবেন না।

আর রান্না করার আগে অবশ্যই ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর ভালো করে ধুয়ে নিয়ে উচ্চতাপে ৭ থেকে ৮ মিনিট ঢেকে রান্না করুন শুধুমাত্র একটি লবণযুক্ত করুন।

একটু লবণ মিশিয়ে পালংশাক যে আপনি রান্না করবেন এতে সম্পূর্ণ ক্যালসিয়াম বা অন্যান্য খনিজ উপাদান বজায় থাকবে। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করতে এই খাবারগুলো খাওয়ার কথা একদম ভূলে যাবেন না।

প্রতিদিন আপনি খেতে পারেন এতে আপনার ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করতে এক হাজারের বেশি যে ক্যালসিয়ামের দরকার আপনি হিসেব করে দেখুন যে এই পরিমাণ ক্যালসিয়াম আপনার জোগাড় হয়ে যাবে।

দুগ্ধজাত পণ্য

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার মধ্য দুধ, পনির এবং দই ক্যালসিয়ামের ভাল উত্স। উদাহরণস্বরূপ, এক কাপ দুধে প্রায় 300mg ক্যালসিয়াম থাকে।

পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কেল, কলার্ড গ্রিনস এবং পালং শাকের মতো শাকসবজি ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, এক কাপ রান্না করা কালে প্রায় 90mg ক্যালসিয়াম থাকে।

ভাল খাবার

কমলার রস, সয়া দুধ এবং প্রাতঃরাশের সিরিয়াল সহ অনেক খাবার ক্যালসিয়ামের সাথে সুরক্ষিত।

মাছ

সার্ডাইনস এবং সালমন এর মতো নির্দিষ্ট ধরণের মাছ ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ধারণ করে।

বাদাম এবং বীজ

বাদাম, তিলের বীজ এবং চিয়া বীজ ক্যালসিয়ামের ভাল উত্স।

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার সর্বশেষ

আজকে এই পর্যন্ত । পোষ্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করবেন । সবাই ভাল থাকবেন । ধন্যবাদ

আরও পড়ুন : সকালে খালিপেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.