...

খাদিজা রাঃ এর জীবনী । Hazrat Khadija RA

901 views

খাদিজা রাঃ এর জীবনী আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। আজকের এই পোষ্টে আলোচনা করব হযরত খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহার জীবনী নিয়ে।

খাদিজা রাঃ এর জীবনী

চলুন পোষ্টটি শুরু করা যাক। হযরত খাদিজাতুল ক্বুবরা রাযি আল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাই সালাম এর প্রথম স্ত্রী । তিনি উম্মাহাতুল মুমিনীন। সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ইসলামের জীবনী রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান যার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরা হলো।

জন্ম ও পরিচিতি

হযরত খাদিজা রাযিয়াল্লাহু ৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে পবিত্র মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন উচ্চশিক্ষিত ও বিখ্যাত ব্যবসায়ীদের খুয়ালিদের দ্বিতীয় সন্তান। মাতার নাম ফাতিমা বিনতে জায়েদ । মুসলিম জগতে তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা রাদিয়াল্লাহু আনহা নামে পরিচিত।

তার ষষ্ঠ পূর্বপুরুষ মক্কার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ।উত্তরাধিকার সূত্রেই খাদিজা ছিলেন একজন বৃত্তবান, প্রভাবশালী ও বিদুষী নারী, ছিলেন খুব সুন্দরী ও তিনি ছিলেন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও বুদ্ধিমতী। ব্যবসায়ী খাদিজা পিতা জীবিত থাকাকালে তিনি পিতার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।

যদিও তারা আরো দুই ভাই এবং তিন বোন ছিল তিনি তার ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন । বিশ্ব নবীর প্রতিভা আকৃষ্ট তিনি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সালাম কি তার ব্যবসার প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করেন। সহযোগী হিসেবে তিনি তাঁর বিশ্বাস্থ দাস মাইসারা কে বিশ্ব নবীর সঙ্গে পাঠালেন ।

বিশ্বনবি খাদিজার  পণ্য সামগ্রী নিয়ে তা বিক্রি করে আবার মক্কার উপযোগী পণ্য ক্রয় করে মক্কায় ফিরে আসেন। সেগুলো বিক্রি করে অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি মুনাফা লাভ করেন ।ব্যাবসায়িক সফলতা বিশ্বস্ত দাস মায়ের কাছ থেকে জেনে বিশ্ব নবীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।

বিবাহের প্রস্তাব

অথচ হযরত খাদিজার সম্ভ্রান্ত ও ধনী ব্যক্তি  বিবাহের প্রস্তাব দিলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। অবশেষে তিনি বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু ইসলামের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বিবাহের প্রস্তাব পাঠান। হযরত খাদিজার বয়স যখন ৪০ বছর বিশ্ব নবীর বয়স তখন ২৫ বছর । বিয়ের উভয় পক্ষের খরচ খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহা বহন করে এবং তাদের উভয়ের পোশাকের জন্য দুই ওকিয়া স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা ব্যয় করেন

সন্তান জন্মদান

রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাই সালাম এর তার দুই ছেলে চার মেয়েসহ ৬ সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম সন্তান কাসিম অল্প বয়সে মক্কাতে ইন্তেকাল করেন। দ্বিতীয় সন্তান হযরত জয়নাব। তৃতীয় সন্তান আব্দুল্লাহ বিশ্ব নবীর নবুয়ত প্রাপ্তির পর জন্ম লাভ করে এবং অল্প বয়সে ইন্তেকাল করেন।

চতুর্থ সন্তান রুকাইয়া। পঞ্চম সন্তান উম্মে কুলসুম এবং ষষ্ঠ সন্তান হযরত ফাতেমা রাযিআল্লাহু আনহা। বিশ্বনবীর নবুওয়াত লাভের পূর্বে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকাকালীন সময়ে তিনি বিশ্ব নবীকে সর্ব প্রকার সহযোগিতা করেছেন।

খাদিজা রাঃ এর জীবনী হযরত জিবরীল আমিনের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে তিনি ভয় পেলে হযরত খাদিজার তাকে অভয় দিয়ে বলেছিলেন আপনি কারো ক্ষতি করেননি। তাই কেউ আপনার ক্ষতি করবেন না।

এমন কি তাকে মানসিকভাবে শক্তি যোগাতে তিনি তার চাচাতো ভাই তাওরাতের বিশেষ ওরাকা বিন নওফলের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। নবুয়ত লাভের পর ইসলামের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছিল হযরত খাদিজাতুল ক্বুবরা রাযি আল্লাহু আনহা।

সম্পদ ওয়াকফ

হযরত খাদিজাতুল ক্বুবরা রাযি আল্লাহু আনহা ইসলাম গ্রহণের পর তার সকল ধরনের সম্পদ  দিনের লক্ষ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম কে হস্তান্তর করেন। ধৈর্য ও সহনশীলতা লাভের পর বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে আল্লাহর এবাদত এবং ইসলামের কাজে আত্মনিয়োগ করেন ।

সংসারের সকল আয় বন্ধ হয়ে যায়। ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে তিনি সব প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলা করে ইসলাম প্রচারের কাজে তাকে সান্তনা দিতেন। সাহস ও উৎসাহ যোগাতে এমনকি মুশরিকদের সকল নির্যাতন ও অমার্জিত আচরন। তিনি অত্যন্ত হালকা এবং তুচ্ছ বলে বিশ্ব নবীর কাছে তুলে ধরতেন । যাতে তিনি শান্তি ও স্বস্তি লাভ করে।

বন্দী অবস্থায় বিশ্বনবীর সেবা

কুরাইশরা বিশ্বনবী সহ সকল মুসলমানকে বয়কট করে । তখন তারা শিয়াবে আবু তালিবের আশ্রয়গ্রহণ করেন । তিনি সেখানে অন্তরীণ হয় । প্রায় তিন বছর বুনো হাঁসেমের সবাই দুর্ভিক্ষের মাঝে অতিবাহিত করেন।

খাদিজা রাঃ এর জীবনী স্বামীর সঙ্গে হযরত খাদিজার সেসব হাসিমুখে বরণ করে নেন। ইসলাম এবং মুসলমানদের এই দুর্দিনে হযরত খাদিজার নিজের প্রভাব খাটিয়ে মাঝে মাঝে খাদ্যদ্রব্যের ব্যবস্থা করতেন।

পৃথিবীর উপর প্রভাব ইসলাম গ্রহণের উপর প্রভাব পড়ে। ইসলামের আবির্ভাবের সময় তার বংশের ১৫ জন বিখ্যাত ব্যক্তির জীবিত ছিল তাদের ১০ জনের ইসলাম গ্রহণ করে বাকি পাঁচজন বদরের যুদ্ধে কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে ।

শ্রেষ্ঠত্ব লাভ

খাদিজা রাঃ এর জীবনী শ্রেষ্ঠত্ব লাভ তিনি ছিলেন বিশ্ব নবির প্রথম স্ত্রী হযরত ইব্রাহিম ছাড়া তার সকল সন্তান হযরত খাদিজার গর্ভে জন্ম হয়। বিশ্ব নবীর স্ত্রীদের মধ্যে তার স্থান ছিল সর্বোচ্চ ।

বিশ্ব নবীর ভালোবাসা লাভ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাম হযরত খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহাকে আমৃত্য ভালোবেসে ছিলেন । তিনি বেশি বেশি স্মরণ করতেন। যার কারণে আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন আপনি একজন বৃদ্ধা কথা মনে করছেন । তিনি মারা গেছেন জবাবে বিশ্বনবী বলে কক্ষনো না মানুষ যখন আমাকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছে সে তখন সত্য বলে মেনে নিয়েছে ।

খাদিজা রাঃ এর জীবনী সবাই যখন কাফের ছিল সে তখন মুসলমান। কেউ যখন আমার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। তখন সে আমাকে সাহায্য করেছে। তার গর্ভে আমার সন্তান হয়েছে।

ইন্তেকাল

রাসুল (সাঃ) এর সঙ্গে ২৫ বছর দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার পর নবুওতের ১০  রমজান ৬৫ বছর বয়সে ২৯ শে রজব মক্কায় ইন্তেকাল করেন। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর স্বয়ং তার লাশ কবরে নামান। তার মৃত্যুর সময় জানাজার নামাজের বিধান ছিল না বিধায় তাকে বিনা জানা যায় মক্কার জান্নাতুল মোয়াল্লা তাকে দাফন করা হয়।

খাদিজা রাঃ এর জীবনী সর্বশেষ

হযরত খাদিজার মূল্যায়ন এর চেয়ে বেশি আর কি হতে পারে। এমন ভাবে হযরত খাদিজার ব্যাপারে বিশ্ব নবীর অনেক বর্ণনা রয়েছে আল্লাহ তাআলা হযরত খাদিজা কে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন । আমিন

আরও পড়ুন: আবু বকর রাঃ এর জীবনী । Hazrat Abu Bakar Siddiq Ra

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.