খেজুর খাওয়ার উপকারিতা আসসালামু আলাইকুম সবাইকে আশা করি মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার কিছু উপকারিতা নিয়ে আজকের আলোচনা করবো। আশা করি পুরো পোষ্ট জুড়েই আমাদের সাথেই থাকবেন।
খেজুর
আমরা অনেকেই জানি খেজুর খাওয়া সুন্নত। আবার এই একটি সুন্নত এর পেছনেও আছে অনেক উপকারিতা। আর এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। রোজা শেষে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এর যোগান দেওয়া এবং ক্লান্তি দূর করার জন্য খেজুর এর গুরুত্ব অপরিসীম ।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে যে উপকার গুলো হয় তা জেনে নেয়া যাক। খেজুরে আছে প্রচুর শক্তি, অ্যামিনো অ্যাসিড, শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল । প্রতিদিন রোজায় আমাদেরকে দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকতে হয়।
গ্লুকোজ বাড়ায়
আর যার কারণে আমাদের দেহে প্রচুর গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়। তখন এই খেজুর আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ এর ঘাটতি যোগান দিতে সাহায্য করে। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক খেজুরের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা।
চর্বি থাকে না
খেজুরে কোন কোলেস্টেরল এবং বাড়তি পরিমাণে চর্বি থাকে না। যার ফলে আপনি যখন সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করবেন তখন অন্যান্য ক্ষতিকর ও চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
প্রোটিন সরবরাহ করে
খালিপেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা । আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যাবশ্যকীয় একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। । শরীরের জন্য খুব অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।
ভিটামিন
খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক যেমন বি১,বি২.বি৩ এবং বি৫। এছাড়াও ভিটামিন এ এবং সি ভিটামিন পাওয়ার আরো একটি সহজ মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। সেই সাথে খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় সেইসঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও খেজুর অত্যন্ত কার্যকর ।
আয়রন
আয়রন মানবদেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে ফলে এটি হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায় । তাই যাঁদের দুর্বল হৃদপিণ্ড তাদের জন্য খেজুর হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ ঔষধ।
ক্যালসিয়াম
খালিপেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা । ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরের আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা হাড়কে মজবুত করে। খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে। খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আশে পূর্ণ।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
এক গবেষণায় দেখা গেছে খেজুর পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে । আর যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের বেলায় ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। খুব সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে খেজুর আব্দমিনাল ক্যানসার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
শর্করার ঘাটতি পূরণ
অবাক করা বিষয় হচ্ছে এটি অনেক সময় ওষুধের চেয়েও ভালো কাজ করে। মাত্র কয়েকটা খেজুর কমিয়ে দেয় ক্ষুধার জ্বালা এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। এই কয়েকটা খেজুর কিন্তু শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে দেয়।
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে
খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে । কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে । কখনও কখনও ডায়রিয়ার জন্য এটা অনেক উপকারী। যকৃতের সংক্রমণে খেজুর অনেক উপকারী । এছাড়া গলা ব্যথা ভিন্ন ধরনের জ্বর সর্দি এবং ঠান্ডায় খেজুর উপকারী।
খেজুর অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ায় বেশ উপকারী। ভেজানো খেজুর খেলে বিষক্রিয়ায় বেশি দ্রুত কাজ করে। প্রচুর মিনারেল ও আয়রন থাকার কারণে খেজুর রক্তশূন্যতা রোধ করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন ।
দ্রুত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খুব দ্রুত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে । সারাদিন রোজা রাখার পর রোজাদার ব্যক্তি যদি মাত্র দুইটি খেজুর খান তবে খুব দ্রুত কেটে যাবে তাদের ক্লান্তি ।
খেজুর নানা ভিটামিন এ পরিপূর্ণ থাকার কারণে এটি মস্তিষ্কের চিন্তা ভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে। সেই সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ছাত্র-ছাত্রী যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভালো থাকে।
হৃদ রোগ প্রতিরোধ করে
খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম যা বিভিন্ন ধরনের হৃদ রোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে খেজুর শরীরের খারাপ ধরনের কোলেস্টেরল কমায় ।
খালিপেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা । ভালো কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। খেজুরের এরকম আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে তাই শুধু রমজান মাসেই নয় আমাদের খেজুর খাওয়া উচিত সারাবছর প্রতিদিন।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সর্বশেষ
খেজুর আমাদের জন্য অতি গুরুত্বপুর্ন খাদ্য। তাই আমরা নিয়মিতভাবে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে । আজকে এই পর্যন্তই। ভাল লাগলে একটি কমেন্ট করবেন । সবাই ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
আরও পড়ুন : মধু খাওয়ার উপকারিতা । Health Benefits of eating honey