পড়া মনে রাখার উপায় গুলো সম্পর্কে অনেকের অভিযোগ করে থাকে। কিভাবে পড়তে বসলে তাড়াতাড়ি পড়া মুখস্ত হয়। কিভাবে পড়লে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব। এইসব বিভিন্ন সমস্যা আমাদের মাঝে অনেকেরই বিদ্যমান।
আজকের পোষ্টে আলোচনা করা হবে তোমরা কিভাবে পড়া আরো বেশি মনে রাখতে পারবে। আমরা অনেকেই দেখি ক্লাসে কিছু কিছু ছাত্র ভালো করছে। কিন্তু তারা কোন পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে তাদের পড়ালেখা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই সম্পর্কে আমরা জানি না।
তাই নিচে কয়েকটি পড়া মনে রাখার কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনিও আরো বেশি পড়ালেখায় মনোযোগী এবং মুখস্ত থাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল গুলো
১. বিরতি নিয়ে রিভিশন।
২. ফাইনম্যান পদ্ধতি।
৩. পোমোডোরো পদ্ধতি।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম।
৫. নেমোনিক পদ্ধতি।
৬.পড়তে বসার আগে ১০ মিনিট হাঁটা।
৭.পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করা।
৮.কালারিং বা মার্কার পেন ব্যবহার করে দাগিয়ে পড়া
৯.বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা।
১০.লিখে লিখে বা ছবি এঁকে পড়ার অভ্যাস করা।
১১.Concept Tree ব্যবহার করে পড়া।
১২.পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা।
১৩.যা পড়েছি তা অন্যকে শেখানো।
১. বিরতি নিয়ে রিভিশন: জার্মান মনোবিদদের মতবাদ অনুযায়ী, কোন কিছু পড়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ৪৪ শতাংশ আমাদের মনে থাকে। তাই আমাদের উচিত তাৎক্ষণিক রিভিশন না দেওয়া।
আমরা যে বিষয়গুলো পড়ছি তা সাথে সাথে রিলেশন না দিয়ে। বারবার রিভিশন করার মাধ্যমে অনেকাংশেই আমাদের পড়া মনে থাকে। তাই আজকে থেকে তাৎক্ষণিক রিলেশন না দিয়ে। আমরা বিরতি দিয়ে রিভিশন দিব।
২. ফাইনম্যান পদ্ধতি: পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় এটি উদ্ভাবন করেন। কোন কিছু খুব সহজভাবে কারো কাছে বুঝানোর পদ্ধতিকে ফাইনম্যান পদ্ধতি বলে।
আমরা কোন কিছু পড়ার পর যদি অন্যকে শেখানোর চেষ্টা করি। তাহলে আমাদের মনে থাকার প্রবণতা বেড়ে যায়। কোন কিছু শেখানোর সময় সেই পড়াটি নিজের মতো গুছিয়ে সংক্ষেপ করে নিতে হয়। ফলে পড়াটি আপনার মাথায় গেঁথে যায়।
৩. পোমোডোরো পদ্ধতি: আমাদের পড়তে বসলে বিভিন্ন চিন্তায় মাথা আসে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রযুক্তির উপর আমাদের অনেক আকর্ষণ চলে আসায়। পড়ার সময়েও এগুলো নিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে।
এই সমস্যায় থেকে মুক্তির জন্য পোমোডোরো পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এই পদ্ধতিতে একজন মানুষ মোট ২৫ মিনিট সময় নিয়ে কোন কাজ করবে । কাজ করার ওরে ৫ মিনিট বিরতি নিবে। এই পাঁচ মিনিট বেচে দিবে বিশ্রামের জন্য।
এতে করে আপনার যেকোনো কাজের প্রতি মনোযোগ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তাই আপনি যদি পোমোডোরো পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। তা হলেও আপনার পড়া মনে রাখা সম্ভব হবে।
৪. প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম: পড়াশোনা শেষ করে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে পারলে। পড়া মনে রাখার বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যারা আজ সারারাত জেগে পরীক্ষা দিতে অভ্যস্ত। তাদের পরীক্ষা অনেক সময় খারাপ হয়।
তাই এই সমস্যা মুক্তির জন্য আপনাকে অবশ্যই দৈনিক ৮ঘণ্টা করে ঘুমাতে হবে। ঘুমের মাধ্যমে আপনি যা পরিশ্রম করেছেন তা থেকে সহজেই শরীরকে ক্লান্ত মুক্ত করতে পারেন।
৫. নেমোনিক পদ্ধতি: নেমোনিক পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন রকম ছোট ছোট জিনিসগুলো মনে রাখা সহজ হয়। এই পদ্ধতিতে ছড়া, গল্প, ছবি মনে রাখতে সহজ হয়।
পড়াশোনার করার জন্য উপরে বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে । এখন কিভাবে আপনি আপনার পড়া কে শুরু করতে পারেন সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
পড়তে বসার আগে ১০ মিনিট হাঁটেন
পড়তে বসার আগে অবশ্যই ১০ মিনিট হাটুন। এছাড়াও আপনি ব্যায়াম করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং পড়ার মুখস্ত করার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন
আপনি যে বিষয়টি পড়ছেন সেটির আকর্ষণ অনুভব করুন। আমাদের পছন্দের বিভিন্ন জিনিস আমরা মনে রাখতে পারি। তাই আপনি যাই পড়ছেন অবশ্যই তার আকর্ষনীয় পড়ুন।
কালারিং বা মার্কার পেন ব্যবহার করে দাগিয়ে পড়া
পড়তে বসার আগে অবশ্যই একটি মার্কার পেন নিয়ে বসেন। কেননা বইয়ের যে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো আছে। তা যদি আপনি মার্কার দিয়ে মার্ক করতে পারেন। ফলে পরবর্তীতে যে অংশগুলো মার্ক করে রেখেছেন সেটি পড়তে সুবিধা হবে।
এছাড়াও এ পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি আপনার মস্তিষ্কের ভিজুয়াল ইফেক্ট আরো বৃদ্ধি পায়। ফলে আপনার পড়াকে আরো মনে রাখতে সাহায্য করে।
ভাগ করে পড়তে চেষ্টা করুন
আপনি যে বিষয় গুলো পড়ছেন তা অবশ্যই ছোট ছোট ভাগ করে পড়ুন। কারণ আমাদের অনেকেরই অনেক পড়া দেখতে ভালো লাগে না। ফলে মন থেকে পড়ার আকর্ষণ কমে যায়। তাই অবশ্যই পড়াকে ছোট ছোট খন্ড করে পড়তে চেষ্টা করুন।
সময় নির্ধারণ করুন
আপনার পড়তে বসলেই যে সময়ের মধ্যে আপনি পড়ার প্রতি মনোযোগ থাকে সে সময় নির্বাচন করুন। কেননা আমাদের অনেকেরই সকালবেলা পড়তে ভালো লাগে। আবার অনেকেরই রাতে পড়তে ভালো লাগে।
আপনার পছন্দ অনুযায়ী পড়ার সময় নির্ধারণ করুন। যাতে করে আপনি আপনার পড়াকে আগের চেয়ে দ্রুত শেষ করে দিতে পারেন।
যা বলেছেন তা অন্যকে শেখাতে
আপনি পড়েছেন এখন যদি অন্যকে শেখাতে চান তাহলে আপনার যেমন ভুলত্রুটিগুলো বেরিয়ে আসবে তেমনি আপনার পড়ার বুদ্ধি আরও মজবুত হবে। এতে আপনার পড়া আরো আয়ত্তহয়েছে কিনা তা বুঝতে পারবেন। ফলে পড়ার প্রতি আরো বেশি আপনি দক্ষ হয়ে উঠবেন।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আশা করি আপনারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে অনেক উপকৃত হবেন। এইরকম নিয়মিত পোস্ট পেতে আমাদের ব্লগইনফো বিডি এর সাথে থাকবেন।
ব্লগইনফো বিডিতে যেকোনো তথ্যের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও নীচের কমেন্টে কমেন্ট করতে পারেন।
ধন্যবাদ
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে পড়া মনে রাখার সহজ মাধ্যম গুলো জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া এই রকম একটি শিক্ষানীয় পোস্ট শেয়ার দেওয়ার জন্য।
অনেক সুন্দর ও উপকারি পোষ্ট অনেক ভালো লাগল ধন্যবাদ