দীর্ঘদিন ধরে জিমে যাচ্ছেন। কঠোর পরিশ্রম করছেন কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছেনা। দিন শেষে হতাশা এক্সারসাইজ করা ছেড়ে দিচ্ছেন। এমন ঘটনা যাদের সাথে ঘটছে অথবা নতুন দিন শুরু করেছেন তাদের জন্য আজকের এই পোষ্টটি ।
শুধুমাত্র বেশি ব্যায়াম করলেই আপনি আপনার ইচ্ছামত বডি বিল্ডিং করতে পারবেন না । এর জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি আপনাকে সঠিক খাবার খেতে হবে।
সুঠাম শরীর গঠনের ব্যায়াম কাজ করে মাত্র ২০ ভাগ আর ৮০ ভাগ সঠিক খাবার। তো বুঝতেই পারছেন খাবারের গুরুত্ব আসলে কতটা। আপনি যদি দিনের পর দিন ব্যায়াম করতে থাকেন।.
প্রোটিন জাতীয় খাবার
অথচ আপনার খাদ্যাভ্যাস ঠিক না রাখেন তাহলে আপনি যত ব্যায়াম করেন না কেন তা কোন কাজে আসবে না। তাই আজ আমরা আপনাদের এমনই দশটি খাবার সম্পর্কে বলব যেগুলো খেলে আপনি খুব দ্রুত মাসেল ব্যায়াম করতে পারবেন ।
এছাড়াও পোষ্টের শেষে ব্যায়ামের আগে ও পরে খাবার সম্পর্কে আলোচনা করবো । আশা করি পোষ্টটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন তবে চলুন জেনে নেয়া যাক।
ডিম
তালিকা ১০ নম্বরের ডিম ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার উপাদান। এটি পেশী গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া অন্যটি অ্যাসেনশিয়াল এসিড কোন সঠিক এবং ভিটামিন ডি থাকে ডিমে ।
ডিমের কুসুম ভিটামিনের আরো ভালো একটি উৎস। এতে রয়েছে ভিটামিন এ ,ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি, এই ভিটামিন গুলো বাড়াতে সাহায্য করে । চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তর পেশি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
দুধ
নয় নম্বরে আছে দুধ।পেশি তৈরির জন্য দুধ একটি ভালো খাবার এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে ভালো কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি । এছাড়াও এটি আপনার হার কি করে দীর্ঘ এ জন্য নিয়মিত দুধ পান করা ভালো।
এতে পেশি তৈরীর জন্য বেশ ভালো কাজ করে ।বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয় ব্যায়ামের পর একগ্লাস দুধ খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী ।
বাদাম
৮ নাম্বার আছে আছে বাদাম। মাত্র ১ গ্রাম কাজু ও কাঠ বাদামের রয়েছে ১৫০ থেকে ১৭০ ক্যালরি বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার যা মাংসপেশি গঠনে সহায়তা করে কোন ধরনের বাড়তি ক্যালোরি ছাড়াই।
এটি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ম্যাগনেসিয়াম এর বেশ ভালো উৎস। যা দেহের মাংসপেশি গঠনে সহায়তা করে । সকালে ঘুম থেকে উঠে আধাকাপ পরিমাণ বাদাম খেতে পারেন।
সামুদ্রিক মাছ
সাত নম্বরে আছে সামুদ্রিক মাছ পাস্তা ভাতসালা কিংবা নিজের মন মত অন্য যেকোনো খাবার তো খাবেনই। মাছ থাকলে খুব ভালো সামুদ্রিক মাছে বিদ্যমান খনিজ উপাদান টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি করে তবে সামুদ্রিক মাছ প্রায় প্রতিদিন নয় কিছুদিন পরপর খাওয়াই ভালো ।
কাঁচা ছোলা
নাম্বার ৬ আছে কাঁচা ছোলা কাঁচা ছোলার গুণ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি । প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী ছোলায় আমিষ প্রায় ১৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট প্রায় ৬৫ গ্রাম ফ্যাট মাত্র পাঁচ গ্রাম ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ভিটামিন এ ১৯২ মাইক্রো গ্রাম এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন b1 b2 রয়েছে। ব্যায়াম করার আগে কাঁচা ছোলা খেয়ে নিলে আপনার শরীরের ক্যালরি ঠিক থাকবে এবং বেশি ঘনত্ব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
মসুর ডাল
পাঁচ নম্বরে আছে মসুর ডাল। মসুর ডালে প্রোটিনের, ফাইবার, অ্যাসেনশিয়াল অ্যামাইনো এসিড, আয়রন, ভিটামিন b1, প্রচুর পরিমাণে থাকায় এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ১০০ গ্রাম রান্না করা মসুর ডালের প্রায় ১১৬ ক্যালোরি থাকে।
এছাড়া এতে ১১% ডায়েটারি ফাইবার ৬৩% কার্বোহাইড্রেট ২৫ শতাংশ প্রোটিন জাতীয় খাবার জাতীয় উপাদান রয়েছে। শুধু মাসেল বিল্ডিং নয় মসুর ডালের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না ।
পিনাট বাটার
চার নম্বরে আছে পিনাট বাটার। পিনাট বাটারের আছে প্রচুর প্রোটিন জাতীয় খাবার জাতীয় উপাদান এবং উপকারী ফ্যাট তাই এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালোরি যা একজন মানুষকে তার দৈনন্দিন কাজের জন্য যথেষ্ট শক্তি প্রদান করে।
তাই সকালের খাবারের পিনাট বাটারের উপস্থিতি সারাদিনের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাবে। একজন মানুষের দিনে 2 টেবিল চামচ পিনাট বাটার গ্রহণ করা উচিত ।
এটি ব্যায়ামের সময় ক্লান্তি দূর করবে এবং সেইসাথে মাসেল গঠন সহায়তা করবে ।
প্রোটিন শেক
তিন নম্বরে আছে প্রোটিন শেক সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুড সাপ্লিমেন্ট । যে আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। তিন ধরনের প্রোটিন শেক খুবই জনপ্রিয়।
দুধের সাথে দু’চামচ হয়ে প্রোটিন পাউডার এবং ক্যাসেট প্রোটিন পাউডার মিক্স করে ব্যায়ামের পর খেলে সব থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায় । তবে অতিরিক্ত প্রোটিন শেক খেতে যাবেন না ।এর ফলে অনেকেই শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
মাংস
দুই নম্বরে আছে মাংস ।গরু-মহিষ খাসী ভেড়া প্রভৃতি পশুর মাংস । পুষ্টিগুণ বিচারে লাল মাংস অনেক সমৃদ্ধ এতে প্রচুর আয়রন প্রোটিন ভিটামিন এ ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে যা শরীর গঠনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অতিরিক্ত খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
অ্যাভোকাডো
সর্বশেষ এক নম্বরে আছে অ্যাভোকাডো মাখনের মতো কোমল মসৃণ ও সুগন্ধি ফল। উষ্ণ আবহাওয়ায় জন্মায় একে বলা হয়ে থাকে বহুমুখী গুণের অধিকারী।
আভোকাডো একমাত্র ফল যাতে প্রচুর ফ্যাট থাকে অ্যাভোকাডো বিশ রকমের ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে ।এছাড়াও এতে গুরুত্বপূর্ণ এন্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন এবং বিটা ক্যারোটিন থাকে অ্যাভোকাডো দাম যদি সামর্থের বাইরে চলে যায় তবে আপেল খাবেন।
ব্যায়ামের আগে ও পরে কি ধরনের খাবার খাবেন
এবার আসুন ব্যায়ামের আগে ও পরে কি ধরনের খাবার খাবেন জেনে নেই। ব্যায়ামের আগে ব্যায়াম করার এক ঘন্টা আগে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে হবে। ফল খেতে পারেন
ব্যায়ামের আগে ফল খাওয়ার জন্য আপেল বেশ আদর্শ ফল। এর পাশাপাশি টোস্ট কনফ্লাক্স এগুলো খেতে পারেন। এছাড়া জটিল কার্বোহাইড্রেট হিসেবে কলা খেতে পারেন।
এই খাবারগুলো হজম হতে কম সময় লাগে এবং ব্যায়ামের আগে শরীরে শক্তি যোগাবে। আপনি চাইলে কাঁচা ছোলা ও খেতে পারেন । এছাড়া ব্যায়ামের আগে অবশ্যই এক গ্লাস পানি পান করে নেবেন
এর ফলে শরীর ভালো ভাবে আদ্র থাকবে। কখনোই খালি পেটে ব্যায়াম করবেন না। ব্যায়ামের ফলে যে চাপ পড়বে সেটি শরীরের শর্করা কমিয়ে দিতে পারে।
ব্যায়ামের পরে যা খাবেন
এবার চলুন জেনে ব্যায়ামের পরে যা খাবেন ব্যায়ামের পর শরীরের কন্ডিশন এর মাত্রা বেড়ে যায় এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে ।
তাই এই অবস্থা প্রতিরোধে যত দ্রুত সম্ভব খাবার খান বিশেষ করে পেশি বাড়াতে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। এর জন্য অনেকে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট থাকেন।
তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি কলা এবং আপেল একসঙ্গে ব্লেন্ড করে খেতে পারেন। এটা প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট দুটোরই চাহিদা পূরণ করবে। দেহের শক্তির জন্য প্রোটিনের প্রয়োজন আছে তবে প্রোটিন হজম করা একটু কঠিন।
এটি কিডনিতে চাপ ফেলে। তাই প্রোটিন এর পাশাপাশি আঁশ জাতীয় খাবার এবং সবুজ শাকসবজি খেতে হবে আশাকরি এই একটি পোষ্টের মাধ্যমে ব্যায়াম করার পর সঠিক খাবার প্ল্যান সম্পর্কে জানতে পেরেছেন ।
এক নজরে প্রোটিন জাতীয় খাবার
এখানে কিছু উচ্চ-প্রোটিন জাতীয় খাবার একটি তালিকা রয়েছে:
- ডিম
- মুরগির বুক
- মাছ (সালমন, টুনা, হালিবট)
- চর্বিযুক্ত গরুর মাংস (গ্রাউন্ড গরুর মাংস, স্টেক)
- গ্রীক দই
- কুটির পনির
- মসুর ডাল
- ছোলা
- কুইনোয়া
- বাদাম (বাদাম, চিনাবাদাম, কাজু)
- বীজ (চিয়া বীজ, ফ্লেক্সসিডস, কুমড়ো বীজ)
- তোফু
- এডামাম
- হুই প্রোটিন পাউডার
- সয়াদুধ
- পনির (পারমেসান, মোজারেলা, চেডার)
- দুধ
- ওটস
- ব্রোকলি।
প্রোটিন জাতীয় খাবার সর্বশেষ
আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী এবং আপনার হজমের ক্ষমতা অনুযায়ী সবথেকে উত্তম একটি খাবার তালিকা আপনি বেছে নেবেন। পোষ্টটি ভাল লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে পৌঁছে দিন । আজ এই পর্যন্তই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন । ধন্যবাদ