...

বনি ইসরাইলের দুই জেলের কাহিনী

167 views

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই ব্লগইনফো বিডির সম্পূর্ণ নতুন একটি বনি ইসরাইলের দুই জেলের কাহিনী পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছে।

আজকের এই পোষ্টে থেকে আপনি জানতে পারবেন বনি ইসরাইলের ২ জেলের কাহিনী। মুমিন ও কাফের দুই ভাইয়ের হৃদয়বিদারক ঘটনা।

এছাড়াও আরো কিছু সুন্দর শিক্ষণীয় ঘটনা এই পোষ্ট থেকে আপনি জানতে পারবেন। তাই পোষ্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার অনুরোধ থাকলো।

বনি ইসরাইলের দুই জেলের কাহিনী

দুইজন জেলে বাস করত তারা পরস্পর ছিল সহোদর ভাই। এক ভাই ছিল মুমিন এবং অন্য ভাই ছিল কাফের ।

দুই ভাই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। কাফের ভাইটি ছিল মুশরিক । সে শয়তানকে আরাধ্য হিসেবে গ্রহণ করেছিল।

যখন সে নদীতে জাল ফেলতেও তখন তার জালে প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পড়তো। এতটাই মাছ যে তার একার পক্ষে জাল টেনে পাড়ে তোলা সম্ভব হতো না।

আর মুমিন ভাই টা যখন নদীতে জাল ফেলতেও তখন একটা কি দুটোর বেশি মাছ উড়তে না। কিন্তু সে এতেই ধের্য সহকারে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করত।

ওই মুমিন ব্যক্তির একজন স্ত্রী ছিল সে প্রতিদিন বাড়ির ছাদে উঠে কাপড় শুকাতে । একদিন ওই মুসলমানদের স্ত্রী কাফের ভাইয়ের স্ত্রীকে দেখতে পায় ।

কাফের ভাইয়ের স্ত্রী খুব সুন্দর কাপড় আর খুব মূল্যবান সব অলংকারাদি পড়ে রয়েছে। এই দেখে সেই মুসলমান স্ত্রী মনে মনে সব পাওয়ার বাসনা অনুভব করল।

আর সে মনে মনে বলতে লাগল আহা যদি আমার হই রকম থাকত। তখন ওই কাফেরের স্ত্রী বলে উঠল তুমি তোমার স্বামীকে বোঝাও তোমার স্বামী যেন আমার স্বামীর মত মুশরিক হয়ে যায় ।

তাহলে তুমিও আমার মতো ধনী হয়ে যাবে। অনেক দামী দামী অলংকারাদি পড়তে পারবে। এই কথা শোনার পর মুসলমান ব্যক্তি তিনি স্ত্রী মন খারাপ করে নিচে চলে যায়।

আর যখন কাজ শেষ স্বামি বাড়ি ফিরে আসলো, তখন স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে? তোমার মন খারাপ করে বসে আছো কেন?

তখনই স্ত্রী বলল আমাকে তালাক দিয়ে দাও আর তা না হলে তুমি তোমার ভাইয়ের মতো মুশরিক হয়ে যাও।

এই কথা শুনে সে মুসলমান ব্যক্তি বলল হে আল্লাহর বান্দী তোমার কি আল্লাহর প্রতি কোন ভয় নাই?  কিভাবে এমন কুফরি কথা তুমি বলতে পারছ?

তখন তার স্ত্রী বলল, দয়া করে বেশি কথা বাড়িয়ো না। আমি আর এভাবে ফকিরের মতো জীবন যাপন করতে পারবো না ।

তোমার ভাইয়ের স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে দেখো কত দামী দামী পোশাক-আশাক এবং কত দামী দামী ও সুন্দর সুন্দর অলংকারাদি দিয়ে নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে।

আর আমার দিকে চেয়ে দেখো আমার তো পড়ার মতো কিছুই নেই। তখন সে মুসলমান ব্যক্তিকে ভাবলো ও আমার স্ত্রীকে বুঝিয়ে পারা যাবে না।

তাই সান্ত্বনা দিয়ে বললো আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চিন্তা করো না। আমি কাল সকাল থেকে কোনো কারখানায় কাজ করে তোমাকে প্রতিদিন ২ মোহর করে দেবো।

আর সেখান থেকেই তুমি তোমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে কিনে নিতে পারবে । এই কথা শুনে স্ত্রি কিছুটা শান্তনা পেল ।

পরের দিন সকালে উঠেই ওই ব্যক্তি কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে । কিন্তু সে অনেক ঘোরাঘুরি করে অনেক কাজের সন্ধান করে কোথাও একটা কাজ পেল না।

এদিক ওদিক ঘুরে কাজের সন্ধান করছে। যদি কেউ কাজ দেয় তাহলে তার স্ত্রীর কথা তো আর শুনতে হবে না। কিন্তু সে কোনভাবেই কাজের সন্ধান করতে পারল না।

শেষমেশ মন খারাপ করে হতাশ হয়ে একটি নদীর তীরে সন্ধ্যা পর্যন্ত আল্লাহর ইবাদত করল । আর কান্নাকাটি করে রাতের দিক এ বাড়ি ফিরে গেল।

তখন স্ত্রী বলল আজ তুমি সারাদিন কোথায় ছিলে  ।  তিনি বললেন আমি বাদশার দরবারে ছিলাম। বাদশা আমাকে ৩০ দিনের জন্য কাজে রেখে দিয়েছেন।

তখনই স্ত্রী বলল ওই কাজের বিনিময়ে বাদশা তোমাকে কি দেবেন? এই প্রশ্নের জবাবে স্বামি বললো আমার বাদশা বড়ই মেহেরবান । উনি দয়ার সাগর উনার কাছে কোন জিনিসেরই অভাব নেই

আমি যা চাইবো উনি আমাকে তাই দেবেন। কখনো নিরাশ করবেন না। এভাবে ওই ব্যক্তিটি প্রতিদিন নদীর তীরে গিয়ে আল্লাহর ইবাদাতে নিজেকে ব্যস্ত রাখত ।

আর রাতের বেলা বাড়ি ফিরে যেত। ২৯ দিনের দিন তার স্ত্রী একটু বেশি রাগান্বিত স্বরে বলল তুমি যদি কাল সকালে আমাকে কাজের মজুরি না দিতে পারো

তাহলে আমাকে তালাক দিয়ে দেবে। এই কথা শোনা মাত্র সেই ব্যক্তিটি একটু চিন্তায় পড়ে গেল । আর পেরেশান হয়ে পরের দিন এক ইহুদী ব্যক্তির কাছে গিয়ে বলল তুমি আমাকে কাজে নেবে?

আমি তোমার এখানে কাজ করতে চাই । তখন সে ব্যক্তিটি বলল যে তোমার কাজের ব্যবস্থা আমি করতে পারব । তবে এখানে কোন খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা নাই।

শুধু কাজ করে যেতে হবে সেই শর্ত মোতাবেক মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহর নাম নিয়ে কাজে রাজি হয়ে যায় । রোজার নিয়ত এসে কাজ আরম্ভ করে দেয়।

আর এদিকে একজন অপরিচিত ব্যক্তি তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে বলল এই নিন আপনার স্বামীর মজুরি ২৯ আশরাফী। বাদশা পাঠিয়েছেন আপনার স্বামী ২৯ দিন বাদশার কাজে নিয়োজিত ছিল।

এরপর বাদশার কাজ ছেরেদেয় যদি তিনি ৩০ দিন কাজ করতে পারতেন ।তাহলে অনেক ভালো হতো আপনার স্বামীর জন্য। কিন্তু সে অন্য এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।

অর্থপর ২৯ আশরাফী তার স্ত্রীকে দিয়ে ব্যক্তিটি প্রস্থান গ্রহণ করলেন । এরপর ওই স্ত্রী আর ট্রাফিক গুলো থেকে একটি আশরাফী বাজারে নিয়ে গিয়ে একজন স্বর্ণকারের কাছে বিক্রি করলেন ।

তার বিনিময়ে তিনি ১০০০ দিনার পেয়ে গেলেন। এতে তার স্ত্রী খুবই খুশি হয়ে যায়। যখন সন্ধ্যায় ওই মুমিন ব্যক্তি তিনি বাড়ি ফিরে আসলেন তখন তার স্ত্রী বললেন আজ তুমি কোথায় ছিলে?

তখন স্বামী উত্তর দিলো আমি আজ একজন ইহুদী ব্যক্তির কাছে কাজ করতে গিয়েছিলাম। তখন স্ত্রী বলল তুমি বাদশার কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন কাজ কেন করো বা তোমার কাজের মজুরি ২৯ আশরাফী পাঠিয়ে দিয়েছেন।

স্বামী তার স্ত্রীর মুখে সকল ঘটনা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ল। তার চৈতন্য লোভ পেল সে জ্ঞান হারালো যখন তার জ্ঞান ফিরে আসে।

তখন সে কে বলল আফসোস আমি সারা জাহানের বাদশার কাছ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে ফেললাম। এরপর ওই ব্যক্তিটা সবকিছু ত্যাগ করে আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল।

আর একটি বনে গিয়ে বাকি জীবন আল্লাহর ইবাদত করে কাটিয়ে দিল । আল্লাহ রব্বুল আলামীন কতইনা মহান ।

বনি ইসরাইলের দুই জেলের কাহিনী

তিনি মানুষের একমাত্র যেকোন সমস্যা সমাধান করতে পারেন । আমাদের সকলের ঈমানকে মজবুত করে আমাদের দ্বীন ইসলামের পথে জীবন যাপন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আরও পড়ুন: বনী ইসরাইলের দুই ভাইয়ের ঘটনা। ইসলামিক গল্প 2022

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.