পবিত্র রমজান মাসে ইসলামের ধর্মপ্রাণ মুসলি্লরা ইসলামিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা পালন করে। রোজার প্রধান কাজ হল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকা।
রমজানে রোজা রাখার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
চৌদ্দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুসলমানরা নিয়মিতভাবে রমজান মাসে রোজা রেখে আসছে। শুধু ধর্মীয় রীতি অনুসারে নয় রোজা রাখার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। যা আপনাকে বিস্মিত করবে।
রোজা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয় বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে রোজার উপকারিতা অপরিসীম। ব্লগইনফো বিডির আজকের পর্বে থাকছে রোজা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।
বিশেষজ্ঞদের মতে দিনের বেলায় কম খাদ্য গ্রহনের ফলে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন উচ্চ কলেস্টেরল, হূদরোগ, স্থূলতা প্রতিরোধ করে ।
পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য অসুস্থতার উন্নতি ঘটায় । তবে জেনে নেয়া যাক রোজার শরীরের জন্য কতটা উপকারী ।
১.চাপ কমায়
পবিত্র রমজান মাস জুড়ে রোজা রাখা ইসলামের অন্যতম অপরিহার্য আদেশ। রমজান মাসে মুসলমানরা প্রতিদিন ১২-১৪ ঘন্টা রোজা রাখে।
নামাজের জন্য তাড়াতাড়ি উঠে, সূর্যোদয়ের আগে খায়, পরে ঘুমায় এবং সন্ধ্যার পরে তাদের শক্তি এবং তরল সঞ্চয়গুলি পূরণ করতে যথেষ্ট খাবার খায়।
এর কারণে খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের দৈর্ঘ্য এবং ঘুমের ধরণ গঠনমূলকভাবে পরিবর্তিত হয়। পবিত্র রমজান মাস জুড়ে রোজা রাখা হতাশা, উদ্বেগ এবং চাপের মাত্রা কমিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
২. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
গত কয়েক বছরে অনেক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে যে পরামর্শ দেয় যে রমজানের রোজা স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণগুলি কমাতে পারে।
রমজানে রোজা রাখার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা এটি ক্যান্সারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য অসুস্থতার লক্ষণগুলিকেও বিপরীত করতে পারে।
গবেষণা অনুসারে, এটি রক্তে গ্লুকোজ সংশ্লেষণ হ্রাস, সুষম পুষ্টি গ্রহণ এবং টিউমার-হত্যা কোষের বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
৩. আলঝেইমারে সহায়তা করে
যারা আল্জ্হেইমারে আক্রান্ত তাদের জন্য কিছু থেরাপিউটিক পছন্দ রয়েছে, যা ক্রমাগত খারাপ হওয়া জ্ঞানীয় এবং আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি করে।
উপবাস হল একটি থেরাপির বিকল্প যা দ্রুত ফার্মাসিউটিক্যালস এবং চিকিত্সার ডোমেনের বাইরে ট্র্যাকশন অর্জন করছে।
রমজান রোজা, সাধারণত ওজন কমানোর পদ্ধতি হিসাবে প্রচার করা হয়েছে, গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে আলঝাইমারের লক্ষণগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে উপশম করা যায় ।
রোজা থাকা অবস্থায় কমপক্ষে ১৫ ঘণ্টা যাবতীয় খানাপিনা বন্ধ থাকে। এ সময় পাকস্থলী অন্ত্রনালী জকৃত সহ অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়।
তখন এসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিজেদের পুর্ণগঠনে নিয়োজিত হতে পারে। অন্যদিকে দেশের যেসব চর্বি জমে শরীরে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৪.রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়
সেগুলো রোজার সময় দেহের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য ছুটে যায়। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের গ্রন্থে বলেছেন উপবাস করলে শরীরের মধ্যে প্রোটিন, শর্করা, জাতীয় পদার্থ গুলো পাচিত হয় ।
ফলে গুরুত্বপূর্ণ কোষগুলোর পুষ্টিবিধান হয়। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঔষধ ও চিকিৎসা প্রখ্যাত ডাক্তার এলেকশনস বলেছেন উপবাসের মাধ্যমে লিভার রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়।
ফলে ত্বকের নিচের সঞ্চিত চর্বি বেশি প্রোটিন গ্রন্থ সমূহ এবং লিভারে কোষসমূহ আন্দোলিত হয় । আভ্যন্তরীণ দেহযন্ত্রগুলো সংরক্ষণ এবং হৃদপিন্ডের নিরাপত্তার জন্য বিক্রিয়া বন্ধ থাকে।
খাদ্যাভাব কিংবা আরাম-আয়েশের জন্য মানুষের শরীরের যে ক্ষতি হয় রোজা তা পূরণ করে দেয়। যারা আলস্য ও গোঁড়ামির কারণে এবং অতিভোজনের কারণে নিজেদের সংরক্ষিত জীবনের সবথেকে ভারাক্রান্ত করে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে যায়।
৫.কাশি সর্দি থেকে মুক্তি
রোজা তাদেরকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করে। বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানীর নাচ-কারনার বলেন ফুসফুসের কাশি কঠিন কাশি সর্দি এবং ইনফুলেনজা কয়েকদিনের রোজার কারণে নিরাময় হয়।
ডাক্তার দেওয়ান এ কে এম আব্দুর রহিম বলেছেন রোজা পালনের কারণে মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র সর্বাধিক প্রচলিত হয়। রোজা পালনের ফলে বাধ্য বহুমূত্র, অজীর্ণ , হূদরোগম রক্তচাপজনিত, মানুষ কম আক্রান্ত হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে পেপটিক আলসারের রোগীদের রোজা রাখলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। হৃদরোগ উচ্চ রক্তচাপ ও হাঁপানি রোগীদের জন্য উপকারী।
ডাক্তারদের মতে রোজার ফলে মস্তিষ্কের সেরিব্রাল ক্লিনিক সিস্টেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ার কারণে মনের অশান্তি ও দুশ্চিন্তা দূর হয় । উচ্চ রক্তচাপের জন্য মঙ্গলজনক।
বহুমূত্র রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে রোজা খুব উপকারী। ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গেছে একাধারে ১৫ দিন রোজা রাখলে বহুমূত্র রোগের অত্যন্ত উপকার হয়।
কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা রোজা রাখলে কি সমস্যা আরও বেড়ে যাবে ভেবে রোজা রাখতে চান না। অথচ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন রোজা রাখলে কিডনিতে সঞ্চিত পাথরকুচির দূরীভূত হয়।
রমজানে রোজা রাখার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা সর্বশেষ
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে রোজা রাখার উপকারিতা হলো সারাবছর অতিভুজ অখাদ্য-কুখাদ্য ভেজাল খাদ্য খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের জৈব গ্যাস জমা হয় তা এর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
একমাস রোজা পালনের ফলে তাঁরা সহজেই দূরীভূত হয়ে যায়। এই ছিল আজকের আলোচনা। আমাদের পোষ্টগুলো ভাল লাগলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিত করুন ।
রমজানে রোজা রাখার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা পোষ্টটি পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
আরও পড়ুন: রমজান মাসের বিশেষ ৯টি আমল