...

লিভার সিরোসিস রোগের কারণ লক্ষণ ও চিকিৎসা

140 views

লিভার সিরোসিস

লিভার সিরোসিস একটি মারাত্মক এবং অনিরাময়যোগ্য রোগ । লিভারের নানা রকম রোগের মধ্যে এটিকে চূড়ান্ত পর্যায়ের একটি রোগ বলে গণ্য করা হয়। এ রোগে আক্রান্ত হলে যকৃতের ট্রান্সপ্লান্ট বা প্রতিস্থাপন ছাড়া পুরোপুরি আরোগ্য হয় না। এ কারণে এ রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

লিভার সিরোসিস কি ?

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এনএইচএস এর তথ্য অনুযায়ী, যখন লিভারের রোগের নানা পর্যায়ের পর কোষগুলো এমনভাবে আক্রান্ত হয় যে লিভারের আর কাজ করতে পারে না সেই পর্যায় কে লিভার সিরোসিস বলে বর্ণনা করা হয়।

লিভার সিরোসিস লিভার যেসব কাজ করতে পারে না

যখন এই রোগে আক্রান্ত হয় তখন লিভার বা যকৃৎ ও তার স্বাভাবিক কাজ গুলো যেমন বিপাক ক্রিয়া, রক্ত জমাট বাঁধার উপকরণ তৈরি, ওষুধ এবং রাসায়নিকের সুষম খাদ্যের পুষ্টি উপাদানের ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি করতে পারেনা।

লিভার সিরোসিস কেন হয়

লিভার সিরোসিস ও লিভার যকৃতের সূক্ষ্ম সুতার জালের মত ফাইব্রোসিসের বিস্তার ঘটে। যকৃত ছোট ছোট দানা বাঁধে। আস্তে আস্তে সেটির বিস্তার ঘটতে থাকে। ফাইব্রোসিস ছড়িয়ে পড়লে সেখানে আর লিভার নিজেকে পুনরুদ্ধার করতে পারে না বলে লিভার সংকুচিত হয়ে পড়ে।

বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণে লিভারের প্রদাহ তৈরি হয়। লিভারে প্রদাহের তৈরি করে বলেই একে বলা হয় হেপাটাইটিস। যার ফলে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে বি ও সি ভাইরাসের আক্রমণে লিভার বা যকৃৎ এর কার্যক্রম সংকুচিত হয়ে যায় । একেই লিভার সিরোসিস বলা হয়ে থাকে।

এছাড়া আরো কয়েকটি কারণে লিভার সিরোসিস হতে পারে এরকম একটি বড় ফ্যাটি লিভার বা যকৃৎ এর চর্বি জমে যাওয়া। দীর্ঘদিন ধরে লিভারের যদি মাত্রাতিরিক্ত চর্বি জমে তাহলে লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এক সময়ে এর ফলে ও লিভার সিরোসিস হতে পারে।

বাংলদেশে লিভার সিরোসিস এর কারন

বাংলাদেশের অন্তত ২০ শতাংশ মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে ।এদের মধ্যে ১৫ শতাংশের নন-অ্যালকোহলিক হেপাটাইটিস জটিলতা রয়েছে। 

  • দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
  • শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
  • স্থূলতা, খাদ্যাভ্যাস
  • রক্তে কোলেস্টেরল
  • অতিরিক্ত মদ্যপান
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার
  • ইচ্ছে মতো ওষুধ খাওয়া
  • রাস্তাঘাটে বিক্রি হওয়া দূষিত পানি
  • এগুলোর মাধ্যমে যকৃতের রোগ ছড়াতে পারে।

লিভার সিরোসিস এর লক্ষণ

চিকিৎসকরা বলছেন লিভার সিরোসিসের শুরুর দিকে তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না ।অনেক সময় পেটের আল্ট্রাসাউন্ড কিংবা পেটে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে এই রোগটি ধরা পড়ে। জন্ডিস যকৃত রোগের একটি লক্ষণ। রক্ত পরীক্ষা বায়োপসি, সিটি স্ক্যান এমআরআই ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগটি সনাক্ত হতে পারে তবে।

কিছু লক্ষণ দেখা গেলে যকৃতের রোগের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। যেমন

  • শারীরিক দুর্বলতা
  • খাবারে অরুচি
  • পেটে অস্বস্তি
  • ওজন কমে যাওয়া
  • অবসাদ 

ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। লিভার সিরোসিস হলে পেটে বা পায়ে পানি আসতে পারে এবং প্রস্রাব হলুদ হতে পারে। অনেকে চেতনা হারিয়ে কোমায় চলে যেতে পারেন।

লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তির উপায়

চিকিৎসকরা যকৃতের রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিকারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেন ।বর্তমানে বিশ্বের অনেক আধুনিক চিকিৎসা উদ্ভাবিত হয়েছে।বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি এর ক্ষেত্রে শিশুদের জন্মের পরপরই টিকা দেয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্করাও নিতে পারেন। হেপাটাইটিস সি থেকে বাঁচতে যেসব কাজ করবেন না:

  • এক লেজারে একাধিক ব্যক্তির সেভ না করা
  • রক্ত পরিসঞ্চালন ব্যবস্থা পরীক্ষা করে নেয়া,
  • অরক্ষিত যৌন সম্পর্ক পরিহার
  • দূষিত পানি
  • অতিরিক্ত মদ্যপান,
  • খোলা ফলমূলে

যেসব কারণে যকৃতের রোগ হয় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

লিভার সিরোসিস কি ভাল হয় ?

লিভার সিরোসিস হলে সারাজীবন বহন করতে হয় পুরোপুরি আরোগ্য লাভ হয় না তবে সঠিক চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জটিলতা দূর করা যেতে পারে ।

সর্বশেষ

এই রোগের ক্ষেত্রে সর্বশেষ চিকিৎসা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট বা যকৃত প্রতিস্থাপন। বাংলাদেশ এখন যকৃতের প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে তবে ব্যয়বহুল এই চিকিৎসায় বাংলাদেশের ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ হতে পারে

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.