...

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী । Biography of Prophet Muhammad

399 views

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী: প্রায় চৌদ্দশ বছর আগের কথা। আরব উপদ্বীপের তখন চরম উশৃংখলতা ও পাপাচার বিরাজমান। গোত্রে গোত্রে চলছে আভিজাত্য ও বংশমর্যাদা লড়াই। সামান্য কারণে শুরু হতো যুদ্ধ , হত্যা, লুন্ঠন। সেইসময় আরবের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা পৌঁছাতে ঐতিহাসিক এই যুগের নামকরণ করেন আইয়ামে জাহেলিয়া বা  অজ্ঞানতার যুগ ।

আরব সমাজ যখন অন্যায় অপরাধ আর দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জর্জরিত। ঠিক সেই সময় এমনই এক ব্যক্তির আবির্ভাব হয় যিনি পরবর্তীতে শুধু আরব নয় সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। একক ব্যক্তি হিসেবে যার অসামান্য জীবনী নিয়ে লেখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি জীবনীগ্রন্থ।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী

অনুমান করতে পারেন কি? কে সেই মহান ব্যক্তি ? বলছিলাম ইসলাম ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর কথা। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অসাধারণ ছিল।যে বিরুদ্ধবাদীরা ও তার প্রশংসা না করে পারতেন না। মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সফল ও প্রশংসনীয় ।

এবার চলুন জেনে নেয়া যাক কেমন ছিল ইসলাম ধর্মের শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী ।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জন্ম

৫৭০ খ্রীষ্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল মক্কা নগরীর বিখ্যাত কুরাইশ গোত্রের বিন হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন । মা আমিনা নবজাতকের নাম রাখেন আহমেদ। দাদা আবদুল মুত্তালিব ভালোবেসে তার নাম রাখেন মোহাম্মদ।

আরবদের রীতি অনুযায়ী মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে ওঠার মাধ্যমে সুস্থ দেহ ও সু ঘটন তৈরির জন্য শিশু মুহাম্মদকে রাখা হয় হালিমার কাছে। নির্দিষ্ট সময় পর তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয় তার মায়ের কোলে।  ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি তার মায়ের সাথে কাটান ।

জন্মের পূর্বে পিতা আব্দুল্লাহ ৬ বছর বয়সে মা আমিনা কে হারিয়ে বড় হতে থাকেন তার দাদার তত্ত্বাবধানে। বয়স যখন ৮ বছর তখন তার দাদু ইন্তেকাল করেন । এরপর চাচা আবু তালেব দায়িত্ব নেন ভাতুষ্পুত্র মোহাম্মদের। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন কোমল স্বভাবের ।

শৈশব ও কৈশোর কাল

উত্তম চরিত্র সদাচরণ ও সত্যবাদিতা কারণে তাকে ডাকা হতো আলামিন বা বিশ্বাসী । আরবদের মধ্যে বিদ্যমান অন্যায়-অনাচার প্রবণতা এবং প্রতিশোধ তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিত । তাই মক্কায় ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হিলফুল ফুযুল সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হলে তিনিও তাতে যোগ দেন ।

তিনি সবচেয়ে গরিব শ্রেণীর লোকদের সঙ্গে বসতে লজ্জা করতেন না। তিনি ছিলেন বিনম্র নিরহংকারী । একইসাথে যুদ্ধবিদ্যা ও সাহসিকতায় তিনি ছিলেন বীর। শিশুদের সাথে তার ব্যবহার ছিল অনেক সুন্দর । তিনি ছিলেন অসহায় ইয়াতিম দরিদ্র ও মাজলুমের বন্ধু । 

পারিবারিক জীবন

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী শুধু ইবাদত-বন্দেগী নয় বরং ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে তিনি ছিলেন মানবজাতির জন্য আদর্শ । একজন ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রনেতা হিসেবে তিনি যেমন সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ দিয়েছেন।

পেশাগত জীবন

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী: মাত্র ১৫ বছর বয়সী সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। পেশাগত জীবনের প্রথম দিকে তিনি ছিলেন রাখাল। পরবর্তীতে তিনি ব্যবসা শুরু করলেও অল্প সময়ে হয়ে ওঠেন একজন সফল ব্যবসায়ী।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর স্ত্রী সংখ্যা

২৫ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন ৪০ বছর বয়সী খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ কে। খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহু এর জীবন দশায় তিনি আর কোন বিয়ে করেননি। তবে পরবর্তীতে আদর্শিক প্রয়োজনে নারী সমাজের বিভিন্ন উপকারের জন্য এবং আরবদের বিভিন্ন কুসংস্কার ও অযৌক্তিক প্রথা দূর করার জন্য মোট ১১টি বিয়ে করেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর মেয়েদের নাম

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহু এর গর্ভের মোহাম্মদ সাঃ এর ৬জন সন্তান জন্মগ্রহণ করেন তাদের নাম যথাক্রমে কাসিম, জয়নাব, রুকেয়া, উম্মে কুলসুম, ফাতেমা এবং আব্দুল্লাহ একমাত্র ফাতিমা ব্যতীত সকলেই তার জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করেন।

নবুয়ত লাভ

২৯ বছর বয়সের পর তিনি নির্জন হয়ে ওঠেন। মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকেন । ৬১০ খ্রিস্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। তার উপর অবতীর্ণ হয় মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য তাকে মক্কার কুরাইশদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ কত হিজরী সনে মদিনায় হিজরত করেন

৬২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত করেন। ইসলামিক পঞ্জিকা এর হিজরতের বর্ষ থেকে দিন গণনা শুরু হয়। মদিনায় তিনি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের সাথে বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ইতিহাসে বিখ্যাত বদরের যুদ্ধ, উহুদের যুদ্ধ ,খন্দকের যুদ্ধ প্রভৃতি নামে ।

মক্কা বিজয়

৬৩০ খ্রিস্টাব্দে অষ্টম হিজরীতে মুহাম্মদ সাঃ বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ ছাড়া প্রায় বিনা প্রতিরোধে মক্কায় প্রবেশ করে এবং বিজয় লাভ করেন। সেদিন তিনি মক্কা বাসির জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। তার ক্ষমা গুণে মুগ্ধ হয়ে অধিকাংশ মক্কাবাসী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ।

বিদায় হজ

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হজ পালনকালে আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত সমবেত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে তিনি ভাষণ দেন।যা মুহাম্মদ সাঃ এর জীবিতকালীন শেষ ভাষণ হিসেবে বিদায় হজ বা বিদায় হজের ভাষণ নামে পরিচিত।

ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি স্থাপন করেন

জালিমদের  শএু আরব সমাজে তখন নিজ গোত্র ছেড়ে অন্য গোত্রের সাথে যোগদান অসম্ভব রূপে দেখা হতো। কিন্তু তিনি প্রমাণ করেন বন্ধন শুধু গোত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি ভিন্ন ভিন্ন গোত্রের এক মুসলমানের সঙ্গে অন্য মুসলমানের ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি স্থাপন করেন ।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর মৃত্যু

বিদায় হজ থেকে ফেরার পর তিনিই জ্বরে আক্রান্ত হন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ১২ রবিউল আউয়াল ৬৩ বছর বয়সে মুহাম্মদ সাঃ ইন্তেকাল করেন। আর মানবজাতির জন্য রেখে যান এক উত্তম আদর্শ। তিনি ছিলেন দানশীল সর্বাপেক্ষা সত্যভাষী এবং কোমল স্বভাবের অভিজাত বংশের হয়েও তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী সর্বশেষ

তেমনি সাম্য, ন্যায় পরায়নতা এবং দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে তিনি সব ক্ষেত্রেই ছিলেন অনুকরণীয়। এককথায় ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে তিনি ছিলেন বিশ্বমানবতার জন্য একজন আদর্শ শিক্ষক।

বলতে পারেন কেন শুধুমাত্র মানবীয় গুণাবলীর জন্য তার প্রচারিত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করে ও অনেকেই তাকে মহামানবের স্বীকৃতি দিয়েছেন। আপনার মতে বর্তমান বিশ্বের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে তার মত নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করতে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


1 thought on “হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী । Biography of Prophet Muhammad”

  1. আলহামদুলিল্লাহ্‌! আমি গর্বিত আমি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মত হতে পেরেছি। আল্লাহ্‌র কাছে শুকরিয়া

    Reply

Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.