বর্তমানে আপনি শুনবেন দিনের-পর-দিন হার্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে হার্টের রোগ হওয়ার পর হার্টের রোগীর খাবার তালিকা কি খেতে হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা।
সাধারণতঃ মধ্যবয়সী ব্যক্তিরা হার্টের সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যেই আক্রান্ত হওয়ার হার অত্যন্ত ব্যাপক ।তাই এই সময়ের নিয়মমাফিক চলাফেরা করার বিশেষ প্রয়োজন।
আর এই জন্যই হাটের রোগীর খাবার তালিকা নিয়ে সাজানো হয়েছে ব্লগইনফো বিডির আজকের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ পোষ্টটি । প্রথমত আমরা জেনে নিব হার্ট অ্যটাক কী ?
হার্ট অ্যাটাক
হার্ট অ্যাটাক মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। সাধারণত রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ঘটে যা করোনারি ধমনীতে গঠন করে, যা হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করে। এ সময় হার্টের মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিভিন্ন রকম জটিলতা সৃষ্টি হয়।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা
ভবিষ্যতের হার্টের সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য যারা হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন তাদের জন্য হার্ট-স্বাস্থ্যকর ডায়েট গুরুত্বপূর্ণ।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা থেকে কি কি বাদ দিতে হবে। কোন খাদ্যগুলো রোগীদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক । হার্ট অ্যাটাক রোগীদের জন্য কিছু খাবারের মধ্যে রয়েছে ।
ফল এবং শাকসবজি
ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। বিভিন্ন বর্ণময় ফল এবং শাকসব্জী যেমন বেরি, সাইট্রাস ফল, পাতাযুক্ত শাক এবং ক্রুসিফেরাস শাকসব্জী পছন্দ করুন।
শস্য
এগুলি ফাইবার সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। শস্যের রুটি, পাস্তা এবং সিরিয়াল বেছে নিন।
সবুজ শাক-সবজি ও ফলমূল নিয়মিত খেলে হার্টের রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। আবার যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের ব্যক্তিভেদে দুই থেকে তিন রকমের ফল খেতে হবে।
এছাড়াও হার্টের রোগীদের খাদ্য তালিকায় দৈনিক সবুজ শাক-সবজি ও রাখতে হবে। খাবারের তালিকায় নিয়মিত মাছ রাখতে পারেন ।
চর্বিযুক্ত প্রোটিন
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা খাবারে প্রোটিনের চর্বিযুক্ত উত্সগুলি বেছে নিন যেমন মুরগী, টার্কি, মাছ, মটরশুটি এবং লেবু।
লো-ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধ
দুধ, দই এবং পনিরের মতো কম চর্বিযুক্ত বা চর্বি-মুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য পছন্দ করুন।
স্বাস্থ্যকর চর্বি
ফ্যাটগুলির স্বাস্থ্যকর উত্স যেমন বাদাম, বীজ, অ্যাভোকাডো এবং জলপাই তেল ব্যাবহার করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজা খাবার এবং উচ্চ ফ্যাটযুক্ত মাংসে পাওয়া স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট পরিহার করুন।
ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিডগুলিতে খাবার
এগুলি ট্রাইগ্লিসারাইডগুলি হ্রাস করতে এবং শরীরে প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। ভাল উত্সগুলির মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি ফিশ (যেমন সালমন, টুনা এবং সার্ডাইনস), ফ্লেক্সসিডস এবং চিয়া বীজ।
খাবারগুলি পরিহার করুন
অতিরিক্ত লবন খাওয়া পরিহার করতে হবে । সয়াবিন তেল ও সরিষার তেল দিয়ে রান্না করাই ভালো । বাহিরে যেয়ে চানাচুর, মুড়ি ফুচকা এগুলো খাওয়া বন্ধ করুন।
নিত্যদিনের ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকে। আর এই ট্রানস্ফারড রক্তের যে খারাপ কলোরেস্টল তা বাড়িয়ে দেয় । এর ফলে ভালো কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগের ঝুকি বৃদ্ধি পায়।
এই জন্য হার্টের রোগীর খাদ্য তালিকা থেকে তেলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। হার্টের রোগীর খাবার তালিকা থেকে গরুর চর্বি বাদ দিয়ে দিতে হবে। এছাড়াও চর্বিযুক্ত ঘি, ঢালদা বা বাটার এগুলোকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে খাদ্য তালিকা সাজিয়ে নিতে হবে।
নিয়মিত পানি পান
প্রতিদিন নিয়মিত পানি পান করতে হবে। অল্প পানি খেলে এমনিতেই হার্টের উপর চাপ পড়ে আর রোগ ধরা পরলে পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
মুরগির মাংস, মুরগির ডিম , গরুর দুধ খেলে উপকার হবে । নিয়মিত ডাল দৈনিক খাওয়া যেতে পারে। রান্নার তেল হিসেবের অলিব ওয়েল ব্যবহার সবচেয়ে ভাল।
ভোজ্য তেলের বদলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে রান্না করলে হৃদরোগের রোগী পাশাপাশি সকলের জন্যই বেশি ভালো হবে।
কাঁচা ছোলা হৃদরোগের রোগীর খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ছোলা বুট খাওয়ার প্রয়োজন। ফলের মধ্যে পেয়ারা খাবারের সাথে ও অন্যান্য সময়ে সালাত কিনতে হবে।
চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তিন বেলার খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিৎ। কেননা রোগীর বয়স সমস্যার ধরণ ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে দৈনিক খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিত হবে ।
হাটের্ রোগীদের নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করার অভ্যাস করতে হবে । ভোরে উঠে হাঁটাহাঁটি হার্টের রোগীদের জন্য বিশেষ ফলদায়ক। হালকা শরীর চর্চা ও নিয়মিত প্রার্থনা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকতে সাহায্য করবে ।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা সর্বশেষ
পরিশেষে একটি কথাই বলা চলে মেডিসিন নির্ভর জীবন যাপন করার চাইতে প্রকৃতিক নিয়ম মেনে জীবন যাপন করা শ্রেয়। এই ছিল আজকের আয়োজন এই পোষ্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ভালো লাগলে লাইক এবং শেয়ার করতে পারেন। আপনার বন্ধুদের সাথে স্বাস্থ্য সচেতনতা সকল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিত করুন ।
আরও পড়ুন : হার্ট অ্যাটাক কী?এর লক্ষন আর প্রতিকারের উপায় কী?