আল্লাহ্ তাআলা পিতা ও মাতার উভয়কেই সম্মান ও শ্রদ্ধা দেওয়া হয়েছে এবং ইসলামে তাদের জন্য বিশেষ সন্মান রয়েছে।
আল্লাহ্ তাআলা পিতা ও মাতারদের দোয়া করার আদেশ দিয়েছেন এবং আমরা সবসময় পিতা ও মাতারকে সম্মান করতে এবং তাদের জন্য দোয়া করতে পারি।
হযরত মুগীরা (রা.) হতে বর্ণিত নবী করীম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা মায়েদের নাফরমানী করা, হকদারের হক না দেয়া এবং কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দেয়া, তোমাদের উপর হারাম করে দিয়েছেন।
আর আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য গল্প-গুজবে মত্ত হওয়া, অতিরিক্ত সওয়াল করা এবং মাল-সম্পদ নষ্ট করাকে অপছন্দ করেছেন। (বুখারী)
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আমার সর্বোত্তম ব্যবহারের হকদার কে? হুজুর (সা.) বললেন তোমার মা।
লোকটি পুনরায় প্রশ্ন করল অতঃপর কে? হুজুর (সা.) বললেন তোমর মা। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করল অতঃপর কে? হুজুর (সা.) এবার জবাব দিলেন তোমার মা।
লোকটি পুনঃজিজ্ঞেস করল অতঃপর কে? এবারে নবী করীম (সা.)জওয়াব দিলেন যে, তোমার বাবা।’ (বুখারী, মুসলিম)
পিতা মাতার জন্য দোয়া বাংলা উচ্চারণ
১. رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’
অর্থ : (হে আমাদের) পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি দয়া কর; যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)
২. رَبَّنَا ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ ٱلْحِسَابُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
৩. رَّبِّ ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِىَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارًۢا
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও ওয়া লিলমুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত ওয়া লা তাযিদিজ জ্বালিমিনা ইল্লা তাবারা।’
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার বাবা-মাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন আর আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ : আয়াত ২৮)
আমাদের সমাজের অত্যন্ত বহুল প্রচলন হল, সন্তানরা পিতামাতার জন্য তেমন দুআ করে না! বরং তারা হাফেয ও মাওলানাদেরকে দাওয়াত দিয়ে টাকা- পয়সার বিনিময়ে দুআ করিয়ে নেয় । এটাকে ভাড়ায় দুআ করানো বলা যায় ।
আর এই সুযোগে পেটপুজারি অর্থলোভী একশ্রেণীর মানুষ মিলাদ, চল্লিশা, কুরআনখানী, শবিনা খতম ইত্যাদি অসংখ্য বিদআতি কার্যক্রমের মাধ্যমে কলাকৌশলে কিছু অর্থ- কড়ি কামিয়ে নেয় । অথচ ইসলামে এই সব জঘন্যতম বিদআত ।
অথচ এ সকল বিদআতের আয়োজন করা, এগুলোতে অংশ গ্রহণ করা, বিদআতিদেরকে ভাড়া করে পয়সা দেয়া. সবই ইসলামের দৃষ্টিতে গুনাহ ও নিষিদ্ধ কাজ ।