...

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় -মনে না থাকার কারণ

214 views


বাসা থেকে বের হয়েছেন হঠাৎ মনে হয় দরজাটা ঠিকভাবে লক করেছিলেন তো, চুলা কি এখনো চলছে, ফ্যানের সুইচ অন করা, অনেকে মনে করার চেষ্টা করেও মনে করতে পারছেন না। আবার এমন হয় চেয়ার থেকে উঠার পর মনে নেই কেন উঠেছেন।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় -অনেকদিন পর কারো সঙ্গে দেখা তার চেহারা চিনতে পারছেন। কিন্তু তার নাম মনে নেই। বেমালুম ভুলে গেছেন এমনটা বারবার হতে থাকলে বুঝবেন আপনার ভুলে যাওয়ার প্রবণতা আছে। কিন্তু এ প্রবণতা শুধু আপনার আছে এমনটা নয়।

আমাদের আশেপাশে থাকা অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত এই ভুলে যাওয়ার প্রবণতা সাথে বসবাস করছেন। এক্ষেত্রে কোনো সমাধান নেই।অবশ্যই আছে সেগুলো কি জানতে যুক্ত থাকুন শেষ পর্যন্ত।

আমাদের ভুলে যাওয়ার সমস্যা অনেক সময় বংশগত হতে পারে। মার্কিন হেলপ্লাইন জার্নাল তাই বলছে। তবে স্মৃতি শক্তির ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে আপনি কী খাচ্ছেন এবং আপনার জীবনযাত্রা কেমন।

সাধারণত মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা বা.উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমের সমস্যা হলে আমাদের স্মৃতিশক্তিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। সেই সঙ্গে ভিটামিন বি টুয়েলভ এর অভাব থেকে পানিশূন্যতা, থাইরয়েডের সমস্যা, ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও হতে পারে

ভুলে যাওয়া রোগ হাই ব্লাড প্রেসার ডায়াবেটিস হরমোন ভারসাম্যহীনতার সমস্যা থাকলেও স্মৃতি লোপ পেতে পারে। এছাড়া বয়স হওয়ার সাথে সাথে আমাদের স্মৃতি শক্তি ছাপরা হতে শুরু করে।

সময়মতো সচেতন না হলে এই হুটহাট ভুলে যাওয়ার সমস্যা ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝেইমার্সের মতো কঠিন সমস্যায় রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ রা ।আসার কথা হল আপনি যে কোন বয়সের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারেন।

মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাবার

এজন্য মনে রাখতে হবে এই ৯ টি টিপস। মস্তিষ্কে যেন জং না পড়ে সেজন্য কি খাচ্ছেন সেটা খুব জরুরী আমাদের খাবারের ২০ শতাংশ শর্করা ও শক্তি। আমাদের মস্তিষ্কে যায় খাবার হচ্ছে অক্সিজেন।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এমন খাবার বেছে নিন যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তাই যত পারো শাকসবজি খান। সম্ভব হলে প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি খেতে পারেন। তার সাথে যুক্ত করতে হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার।

যেটা আপনি সামুদ্রিক মাছ এবং বাদামে পাবেন। আর সবচেয়ে জরুরি হলো অতিরিক্ত চিনি কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়া। সেইসঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান

আমাদের মস্তিষ্কের মাঝামাঝি ইউ আকৃতির একটি অংশ আছে একে হিপোক্যাম্পাস বলা হয় ।মানুষ যখন ঘুমায় তখন মস্তিষ্কের এই অংশটিতে নতুন নিউরন কোশ্চন নয় যার কারণে স্মৃতি প্রখর থাকে। তাই স্মৃতি ঠিক রাখতে অন্তত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের খুবই প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান এবং নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে উঠুন। সেটা ছুটির দিন হলেও এজন্য সন্ধ্যার পরে চা কফি খাবেন না। ঘুমের অন্তত এক ঘন্টা আগে নিজেকে মোবাইল ল্যাপটপ যে কোন ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে হবে।

মস্তিষ্কের ব্যায়াম করুন

আপনি যদি আজকে থেকে নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করে বিশেষ করে হার্টের ব্যায়াম এবং শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম তাহলে আপনার স্মৃতি হারানো রোগ ডিমেনশিয়া বায়াত হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে না গবেষণায় এমন প্রমাণ মিলেছে ।কারণ ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে বেশি হারে অক্সিজেন সরবরাহ।

এছাড়া ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে সিনাপসে সংখ্যা বাড়ে। ফলে মগজের নতুন নতুন কোষ তৈরি হয়। শিক্ষার্থীদের ওপর গবেষণা পরিচালনা করে দেখেছেন কোন কিছু শেখার ৪ ঘণ্টা পর ব্যায়াম করলে সেটি বেশি মনে থাকে।

কারণ ব্যায়াম করলে শরীর থেকে প্রোটিন নির্গত হয়। মস্তিষ্কে যে অংশটি স্মৃতি রক্ষায় কাজ করে প্রোটিন সেই অংশটি কে আরো চাঙ্গা করে তোলে। কিন্তু কোন কিছু মনে রাখার ক্ষেত্রে কতক্ষণ পর শরীর থেকে সেই প্রোটিন নির্মিত হচ্ছে সেটা বেশ জরুরী ।

পড়াশোনার পর পরই নয় বরং চারঘণ্টা পর ব্যায়াম করুন। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে কোন কিছু হেঁটে হেঁটে মুখস্থ করলে সেটা বেশি মনে থাকে। গবেষকরা বলছেন আমাদের মস্তিষ্ক তখনই ভালোভাবে কাজ করবে যখন এতে যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন প্রবাহিত হবে।

ফলে যেসব ধমনীর মধ্যে দিয়ে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছায় সেগুলো বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া অতিরিক্ত করলে মস্তিষ্কে হিপোক্যাম্পাস অংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত এ ব্যাপারেও সাবধান।

যোগাযোগ বাড়ান

গবেষণায় দেখা গেছে যারা তার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে নিয়োমিত যোগাযোগে থাকেন না তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে শুরু করে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়ান এবং সেটা মুখে যোগাযোগ।

মোবাইল ফোনে নয় পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সাথে সামনাসামনি নিয়মিত কথা বলুন। দূরে কোথাও ঘুরতে যান আড্ডা দিন সবার সাথে মিলে হাসাহাসি করে আনন্দে মেতে থাকার চেষ্টা করুন। ভালো হয় যদি শিশুদের সাথে সময় কাটাতে পারেন।

আর যারা আপনাকে এর আগে দেন বা মানসিক চাপ দেন তাদেরকে কাছে ঘেষতে দেবেন না।

মানসিক চাপ

এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, চাইলে কি মানসিক চাপ কমানো সম্ভব? মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন আপনি হয়তো আপনার সাথে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা বা উদ্বেগের কারণ গুলো রাতারাতি ঠিক করতে পারবে না। কিন্তু আপনি এমন কিছু করতে পারেন যার কারণে স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হয়।

প্রথমত ব্যক্তিগত কাজ হোক বা পেশা কোথাও বাড়তি চাপ নেবেন না। আবশ্যক কাজ গুলো অবশ্যই করবেন সীমার বাইরে গেলে না বলতে শিখুন। একসাথে অনেক কাজ না করে বিরতি দিয়ে দিয়ে করুন। কোন কাজ যেমন জরুরি তেমনি জরুরি অবসরও। এই দুটোর মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করুন

মানুষের বিশেষজ্ঞরা অনুভূতি প্রকাশ করতে বলেছেন। হাসি-কান্নার রাগ বিরুদ্ধে কোন কিছু চেপে রাখবেন না। তাছাড়া বই পড়া, দাবা খেলা, শব্দজট, সূর্যের মতো খেলা, মস্তিষ্ককে শর্ট, করে চেষ্টা করুন নতুন কিছু শিখতে সেটা হোক নতুন কোন ভাষা, রান্নাবান্না গাড়ি চালানো, ছবি আঁকা, সাঁতার কাটা কিংবা বাগান করা।

অর্থাৎ এমন কিছু যেটা আপনাকে উন্নত করবে। সেই সঙ্গে যেটা আপনি উপভোগ করবেন। এতে আপনার মানসিক চাপ কমবে। সেইসঙ্গে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকবে।

ধ্যান বা মেডিটেশন এর অভ্যাস

নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন এর অভ্যাস করলে আপনার স্বাস্থ্যের ওপর বেশ ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এতে মস্তিষ্কের নিউরন কোষ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই মানের কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে। যারা নিয়মিত ধ্যান করেন তাদের স্মৃতিশক্তি ভালো ভাবে কাজ করে।

কোন কিছু মনে রাখতে এর ছবির অঙ্গ স্পর্শ এবং তাদের সাথে তথ্য মিলিয়ে মনে রাখার চেষ্টা করুন এটাকে এমন এক্স বলা হয়। যেমন ধরুন কারো বাসা কাঁঠালবাগানে কল্পনা করুন সেই মানুষটি কাঁঠালের একটি বাগানে দাঁড়িয়ে আছে।

লিখে রাখুন

কোন কিছু লিখে রাখলে সেটা মস্তিষ্কেও লেখা হয়ে যায় আপনি যা মনে রাখতে চান সেটা উচ্চস্বরে পুরোন। এছাড়া পুরো বিষয়টিকে ছোট ছোট অংশের ভাগ করে যদি আপনি ছন্দে ছন্দে মিলিয়ে মুখস্ত করেন।

ছন্দ তৈরি করুন

সেটা মনে থাকবে সবচেয়ে ভালো হয় শব্দের প্রথম অক্ষর দিয়ে ছন্দ তৈরি করতে পারলে। যে তথ্য আপনার আগে থেকেই মনে আছে সেটা ব্যবহার করেও.

কোন তথ্য মনে রাখতে পারে। সেই সঙ্গে যেটা আপনি মাত্র শিখেছেন সেটা কিছু সময় বিরতি দিয়ে প্র্যাকটিস করুন বা রিহার্সেল করুন।

আপনি হঠাৎ খুব স্বাভাবিক বিষয়গুলো ভুলে যাচ্ছেন, শব্দ হারিয়ে ফেলছেন, বাড়ির ঠিকানা ভুলে গেছেন, তাহলে দেরি না করে অবশ্য একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ এগুলোর ডিমেনশিয়া লক্ষণ।

ব্লগইনফো বিডি প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার এমন নানা বিষয় সহজ ভাবে আপনাদের সামনে তুলে ধরে। যদি আপনার জানার আগ্রহ থাকে আমাদেরকে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন। আর সর্বশেষ আপডেট পেতে ভিজিট করুন ব্লগইনফো বিডি ওয়েবসাইট ।

আরও পড়ুন:

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির ৫টি কার্যকরী ব্যায়াম চিএসহ
কি খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে?স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির মন্ত্র
স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়গুলো জেনে নিন

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.