ফাইভার গিগ তৈরির কৌশল

3 views

বর্তমান যুগে অনলাইন ইনকামের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফাইভার (Fiverr)। এটি একটি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস, যেখানে বিশ্বজুড়ে ক্লায়েন্টরা তাদের প্রয়োজনীয় সেবা কিনে থাকে এবং ফ্রিল্যান্সাররা সেই সেবা প্রদান করে আয় করে থাকেন। তবে এখানে টিকে থাকতে হলে এবং ভালো ইনকাম করতে হলে প্রফেশনালভাবে গিগ (Gig) তৈরি করা জরুরি।

এই ব্লগ পোস্টে আপনি জানতে পারবেন ফাইভারে সফল গিগ তৈরি করার কার্যকর কৌশলগুলো।

১. সঠিক এবং নির্দিষ্ট সার্ভিস নির্বাচন করুন

প্রথম ধাপ হলো আপনি কী সার্ভিস দিবেন তা নির্ধারণ করা। নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন একটি নির্দিষ্ট সার্ভিস বেছে নিন। উদাহরণস্বরূপ:

  • আপনি যদি ডিজাইন পারেন, তাহলে “Logo Design”, “Business Card Design” ইত্যাদি বেছে নিতে পারেন।

  • কন্টেন্ট লেখায় দক্ষ হলে “SEO Article Writing” বা “Blog Post Writing” হতে পারে।

টিপস: খুব বেশি বিস্তৃত সার্ভিস দেবেন না শুরুতেই। নির্দিষ্ট একটা নিস (Niche) ধরুন।

২. আকর্ষণীয় গিগ টাইটেল দিন

গিগ টাইটেল হতে হবে স্পষ্ট, প্রফেশনাল এবং ক্লায়েন্টের চোখে পড়ার মতো। টাইটেল এমনভাবে লিখুন যাতে ক্লায়েন্ট বুঝতে পারে আপনি কী সেবা দিচ্ছেন।

ভালো উদাহরণ:
✅“I will design a professional and modern logo for your business”
❌ “I can do logo work”

টিপস: টাইটেলের শুরুতে “I will” দিয়ে শুরু করুন, কারণ ফাইভার এমন ফরম্যাটেই গিগগুলো সাজায়।

৩. সঠিক ক্যাটাগরি এবং ট্যাগ ব্যবহার করুন

ফাইভার আপনার গিগকে ক্লায়েন্টদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে ট্যাগ এবং ক্যাটাগরি অনুযায়ী। ভুল ক্যাটাগরি দিলে আপনার গিগ সার্চে আসবে না।

টিপস:

  • ৫টি ট্যাগ ব্যবহার করার সুযোগ থাকে। সবগুলো ব্যবহার করুন।

  • ট্যাগে ব্যবহার করুন কিওয়ার্ড যেমনঃ logo design, business logo, creative logo ইত্যাদি।

৪. প্রফেশনাল গিগ ডিসক্রিপশন লিখুন

গিগের বিবরণ অংশটি হলো আপনার সেলস পিচ। এখানে আপনি ক্লায়েন্টকে বোঝান কেন সে আপনাকে হায়ার করবে।

গিগ ডিসক্রিপশনে যা থাকবে:

  • আপনি কী সার্ভিস দিচ্ছেন

  • ক্লায়েন্ট আপনার কাছ থেকে কী পাবে

  • আপনার অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

  • কাস্টমাইজেশন অপশন (যদি থাকে)

  • কেন আপনাকেই নির্বাচন করা উচিত

উদাহরণ:

Are you looking for a modern and memorable logo? I am a professional logo designer with 3+ years of experience in creating logos for startups and established businesses. I focus on simplicity, uniqueness, and brand value. Let’s make your brand stand out!

৫. গিগ প্যাকেজ তৈরি করুন (Basic, Standard, Premium)

ফাইভার এখন তিনটি প্যাকেজ তৈরির সুযোগ দেয়। এই সুযোগ কাজে লাগান।

প্যাকেজ কিভাবে সাজাবেন:

  • Basic: ছোট কাজের জন্য, কম দাম

  • Standard: মাঝারি কাজ, মাঝারি দাম

  • Premium: সম্পূর্ণ প্রিমিয়াম সার্ভিস, বেশি দাম

উদাহরণ (Logo Design গিগের জন্য):

  • Basic: ১টা লোগো, ১ রিভিশন – $10

  • Standard: ২টা কনসেপ্ট, ৩ রিভিশন – $25

  • Premium: ৩টা কনসেপ্ট, আনলিমিটেড রিভিশন, সোর্স ফাইল – $50

৬. আকর্ষণীয় গিগ ইমেজ বা ভিডিও দিন

মানুষ ভিজ্যুয়াল দেখে ক্লিক করে। তাই আপনার গিগের জন্য সুন্দর এবং প্রফেশনাল একটি ইমেজ তৈরি করুন। চাইলে গিগ ভিডিওও যুক্ত করতে পারেন – এটা ট্রাস্ট এবং কনভার্সন বাড়ায়।

টিপস:

  • Canva বা Photoshop দিয়ে গিগ ইমেজ বানাতে পারেন

  • ভিডিওতে নিজের পরিচয় দিয়ে সার্ভিস ব্যাখ্যা করলে ভালো হয়

  • গিগ ইমেজে অবশ্যই সার্ভিস রিলেটেড কিছু লিখুন

৭. ফাইভার SEO ব্যবহার করুন

ফাইভারে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। তাই গিগকে সার্চ ফ্রেন্ডলি করতে হলে SEO কৌশল জানা জরুরি।

ফাইভার SEO-র জন্য করণীয়:

  • গিগ টাইটেল, ডিসক্রিপশন এবং ট্যাগে সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন

  • আপনার সার্ভিসের সাথে মিল থাকা জনপ্রিয় গিগগুলো দেখে কী কী শব্দ ব্যবহার করছে সেটা অনুসন্ধান করুন

  • নিয়মিত গিগ আপডেট করুন (মিনিমাল পরিবর্তন হলেও)

৮. গিগ পাবলিশ করার পর করণীয়

গিগ পাবলিশ করলেই কাজ পাওয়া যাবে – এমন না। কিছু কৌশল অবলম্বন করলে দ্রুত অর্ডার পাওয়া সম্ভব।

আপনার করণীয়:

  • প্রতিদিন ফাইভারে Active থাকুন

  • Buyer Request-এ নিয়মিত বিড করুন (যদি থাকে)

  • আপনার সার্ভিস নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করুন

  • প্রোফাইল প্রফেশনাল রাখুন এবং ছবি দিন

৯. প্রথম অর্ডার পেলে যত্ন নিন

প্রথম কাস্টমার আপনাকে রেটিং দিবে। সেটা ভালো হলে ফিউচার ক্লায়েন্টরা সহজে আপনাকে বিশ্বাস করবে।

টিপস:

  • ডেলিভারি টাইমের আগেই কাজ দিন

  • রিভিশনের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন

  • নম্রভাবে কাস্টমারকে ফিডব্যাক দিতে বলুন

উপসংহার

ফাইভার গিগ তৈরি করা মানে শুধু একটা কাজের পোস্ট দেয়া না – এটা হচ্ছে নিজের একটা ছোট বিজনেস সেটআপ করা। যদি আপনি উপরের কৌশলগুলো অনুসরণ করেন এবং ধৈর্যসহকারে নিয়মিত কাজ করেন, তাহলে ফাইভার থেকেও ভালো ইনকাম করা সম্ভব।

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের উদ্দেশ্যে বলবো – আজকেই আপনার প্রথম গিগটি তৈরি করে ফেলুন। শুরুর সাহসটাই অনেক বড় জিনিস।

আপনার মতামত দিন:
আপনি কি নতুন গিগ তৈরি করছেন? কী নিয়ে করতে চান? কমেন্টে জানাতে পারেন – আমি সাহায্য করার চেষ্টা করবো!

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment