মানসিক রোগের ১০ লক্ষণ । Symptoms of Mental Illness

241 views

শেষবার কবে আপনি এতটা কষ্টে কিংবা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। যাতে আপনার মনে হয়েছিল কোন কারণে ঠিক নেই। শুধু আপনি একাই এমন ফিল করছেন অথবা করেন ব্যাপারটা একেবারেই তা নয়। আমেরিকার দা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অন মেন্টাল ইল্লনেস নামে এর মতে অযথাই ভয় পাওয়া কিংবা মানসিক চাপের মতো আপাতদৃষ্টিতে ছোটখাট ব্যাপার গুলো গভীর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে ।

আজকের পেষ্টে আপনাকে মানসিক অসুস্থতার এমন ১০ টি লক্ষণ সম্পর্কে জানাও যেগুলো নিজের বা আশেপাশের কারো মধ্যে দেখা গেলে হেলাফেলা করা একেবারেই ঠিক হবে না ।

দুঃখ কিংবা বিষন্নতা অনুভব করা

টানা ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দুঃখ কিংবা বিষন্নতা অনুভব করা । জীবনের বিভিন্ন সময় নানান দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিয়ে আমাদের সবাইকেই যেতে হয়। সাধারণত নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে দুঃখের অনুভূতি আমরা সময়ের সঙ্গে কাটিয়ে উঠতে পারি।

আমেরিকা সাইকিয়াত্রিক অ্যাসোসিয়েশন এর মতে দুই সপ্তাহ কিংবা তারও বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিক রকমের তীব্র দুঃখবোধ অনুভব করা ডিপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারে।

আরও পড়ুন: মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি বিস্তারিত ব্লগইনফো বিডি

দা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ বলছে কোনভাবেই দুঃখবোধ থেকে বের হয়ে আসতে না পারা কিংবা দুঃখবোধ অন্য সময়ের চেয়ে বেশি ভারী মনে হওয়াকে অবশ্যই বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।

তীব্র মুড সুইং করা

তীব্র মুড সুইং হওয়া এবং কেন হচ্ছে তা বুঝতে না পারা। এমনকি কখনো হয়েছে যে হঠাৎ করেই আপনার মুড খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। কিন্তু কখন এবং কেন মনে হচ্ছে আপনি নিজেও বুঝতে পারছেন না।

গবেষণা থেকে জানা যায় মানুষ সাধারণত বিষণ্নতা বা দুঃখ বোঝার মত নেগেটিব অনুভূতির চেয়ে হাসি আনন্দের মতো পজিটিভ অনুভূতি তুলনামূলক বেশি অনুভব করে থাকে। আর মানুষের সুখ-দুঃখের অনুভূতি প্রতিদিনই বদলাতে থাকা খুবই স্বাভাবিক।

কিন্তু কয়েক মুহূর্তে আপনার আচরণ এবং মনোভাব পুরোপুরি বদলে ফেলার নাটকীয় মুড সুইং সম্পর্কে সতর্ক হতে বলেছে দা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর মেন্টাল ইল্লনেস । তাদের মতে এটি বাইপোলার ডিসঅর্ডার এর লক্ষণ হতে পারে।

আরও পড়ুন: লম্বা হওয়ার উপায় ও ব্যায়ামগুলো জেনে নিন

আমেরিকান অ্যাক্যাডেমি অফ পেডিয়াট্রাইক্স জানিয়েছে আরো একটি বিপদজনক লক্ষণের কথা। দিনের বেশিরভাগ সময় একের পর এক দুঃখ কেন অকারণ উচ্ছাস করতে থাকা বিশেষ করে যদি আপনার জীবনে যা কিছু চলছে তার সাথে এসব অনুভূতির কোনো সম্পর্কই না থাকে তাহলে আপনার একটু সতর্ক হতে হবে

কারো সাথে মিশতে না চাওয়া

কারো সাথে মিশতে না চাওয়া ও নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। কাছে কিংবা পরিচিত কারো সাথে সময় কাটানো আপনার শারীরিক ও মানসিক দু’ধরনের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু যদি এমন হয় যে প্রতিনিয়ত ঐ আপনি বিভিন্ন অজুহাতে যে কারও সঙ্গে মেলামেশা দেখা-সাক্ষাৎ কিংবা যেকোন ধরনের সোশালিজিং থেকে দূরে থাকছেন।

মেন্টাল হেলথ বিশেষজ্ঞরা বলছেন যাদের সঙ্গে আপনি দেখা-সাক্ষাৎ কিংবা মেলামেশা করতে পছন্দ করতেন। হঠাৎ তাদের এড়িয়ে চলার প্রবণতা ডিপ্রেশন ও অবসাদের মতো কোনো মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে।

ডিলিউশন বা হ্যালুসিনেশন হতে থাকা

বিশেষজ্ঞরা সাইকোসিসের দুটি দিক সম্পর্কে বলেছেন ডেলিউশন ও হ্যালুসিনেশন কোনো উপলব্ধি বিশ্বাসের কারণে এমন কিছুর অভিজ্ঞতা হওয়া যা বাস্তবে ঘটছে না ঘটে নি এমনকি সেই বিশ্বাস বা উপলব্ধিটা আসলে সত্যি নয়।

এমন প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অন মেন্টাল ইল্লনেস জানিয়েছে প্রতিবছর আমেরিকার এক লাখেরও বেশি মানুষ সাইকোসিস ভোগে । তারা আরো জানায় এমন সাইক্লিং এপিসোড প্রতি ১০০ জনে ৩ জনের জীবনে সিজোফ্রেনিয়া রূপ নিতে পারে ।

দৈনন্দিন সমস্যা

দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন স্বাভাবিক পরিস্থিতি সামলানো খুব কঠিন লাগবে। আপনার জীবনে কি এমন কোনো সময় এসেছে যখন মনে হয়েছে কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না। আপনি কিছুই সামলাতে পারছেন না।

এমন খারাপ সময় যা আপনি কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বরং তা এক সপ্তাহ থেকে দু মাসের মতো লম্বা সময় ধরে আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত তৈরি করছে।

আরও পড়ুন: মেয়েদের লম্বা হওয়ার উপায়গুলো জেনে নিন

টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে যদি দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন স্বাভাবিক পরিস্থিতি সামলানো আপনার কাছে খুব কঠিন মনে হতে থাকে তাহলে তার সাধারন মন মেজাজ খারাপ এর চেয়ে বেশি কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

খুব বেশি অথবা খুব কম ঘুমানো

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিন জানিয়েছে, মোট জনসংখ্যার ১০ থেকে ১৮ পার্সেন্ট মানুষ ঘুমের সমস্যায় ভোগে। তবে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন এমন কারো স্বাভাবিকের চেয়ে খুব কম বা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে তিনগুণ বেশি।

ডিপ্রেশন অ্যাংজাইটি ও বাইপোলার ডিসঅর্ডার এর মত অসুস্থতায় ভোগার রোগীদের মধ্যে ৫০ পার্সেন্ট ইনসোমনিয়া বা হাইপারসোমনিয়া ভুগে থাকেন।

অ্যালকোহলে আসক্ত হওয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানসিক অসুস্থতার বিভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে ভুগতে থাকা মানুষদের ২৫% রাগ অবসাদ কিংবা কোন আসক্তি সামাল দেয়ার জন্য অ্যালকোহল বা কোন ড্রাগস এর ব্যবহার করে থাকেন তাদের মধ্যে অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার ও সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগা মানুষদের মধ্যে অ্যালকোহল ও ড্রাগ ব্যবহারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

অতিমাত্রায় রেগে যাওয়া

আপনার কী মাঝে মধ্যে এত বেশি রাগ হয় যা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় । পরিস্থিতির তুলনায় যে রাগের মাত্রা অস্বাভাবিক রকমের বেশি এই অস্বাভাবিক রাগ তাহলে আপনার ভেতরে থাকা তীব্র মানসিক চাপ এর সতর্ক সংকেত ।

আত্মহত্যা বা নিজেকে আঘাত করার ইচ্ছা

আমেরিকার মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন এর মতে ৩০ এর নিচে বয়সে এমন ১০ শতাংশ মানুষই নিজেকে আঘাত বা আত্মহত্যা করার কথা ভাবে। এমন ইচ্ছা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।

যেমন বাসায় কিংবা কাজের জায়গায় অবহেলা বা নির্যাতনের শিকার হওয়ার । গবেষকরা বলেন আত্মহত্যা করেছে এমন মানুষের শতকরা ৯০ ভাগই বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা ডিপ্রেশনের মত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

আপনি যদি কখনো নিজের মধ্যে আত্মহত্যা বা নিজেকে আঘাত করার ইচ্ছা টের পান তাহলে আপনাকে একজন মেন্টাল হেলথ প্রফেশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

আরও পড়ুন: কি খেলে লম্বা হওয়া যায় জেনে নিন বিস্তারিত

হেলথ নিয়ে আপনার পরবর্তী পোষ্টগুলো পড়তে পারেন। আমাদের সাইটটি ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করে পাশে থাকবেন।

ধন্যবাদ

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


Leave a Comment