মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল : আমাদের সবার মেধা সমান নয় এই কথাটির সঠিক নয় । আমাদের সবার ব্রেনের ধারণক্ষমতার ২.৫ পেটাবাইটস। যদি আপনি ২.৫ পেটাবাইটস ভিডিও দেখতে থাকেন তাহলে আপনার ৩০০ বছর লেগে যাবে।
এখন চিন্তা করুন আমাদের ব্রেইন কি পরিমাণ টাকা জমা রাখার ক্ষমতা রাখে। আমাদের প্রায় সবারই একটি অভিযোগ হলো কোনো কিছু পড়লে মনে থাকে না।আমরা যাই পড়ি না কেন তা একটু পরেই ভুলে যায়।
আরও পড়ুন: পড়াশোনায় মনোযোগ আনার উপায় – Best Tips
পড়া মনে না থাকা নিয়ে কমবেশি হতাশায় ভোগেন না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল ব্যাপার। তবে বিষয়টি নিয়ে হতাশ হলে চলবে না । এমন অনেকে আছেন যাদের আমরা খুব ব্রিলিয়ান্ট বলি যারা খুব সহজে পড়া মুখস্থ বা মনে রাখতে পারেন।
মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল
তারা সবসময়ই এক্সামের টপ করে থাকেন । আসলে এই ব্রিলিয়ান্ট এবং আপনার মধ্যে ব্রেইনের ধারণক্ষমতার কোন পার্থক্য নেই। কারণ সকলের ব্রেনের ধারণক্ষমতার ২.৫ পেটাবাইটস। এখন কথা হল ব্রিলিয়ান্ট বয়ের বইয়ের পড়া মনে থাকে আর আপনার মনে থাকে না।
এর কারণ হলো তারা পড়া মুখস্ত করা বা মনে রাখার জন্য কিছু কৌশল বা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। যা আমরা করিনা তাই আজ আমি আপনাদের পড়া মুখস্ত ও মনে রাখার সহজ এগারটি কৌশলের কথা বলব । তাহলে চলুন জেনে নেই 11 টি কৌশল পদ্ধতি ।
সঠিক সময় নির্বাচন করা
অনেকের ধারনা সারাদিন রাত পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই ভুল ধারণা কারণ সব সময় আমাদের ব্রেইনে একই কাজ করতে পারে না। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বিকালের পর আমাদের ব্রেনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই বিকালের পর অর্থাৎ সন্ধ্যা বা রাতে পড়া বেশি কার্যকর হয় ।
পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করা
যে বিষয়টি পড়বো তার প্রতি আকর্ষণ জাগাতে হবে কিংবা আকর্ষণীয় উপায় পড়ার চেষ্টা করতে হবে । এতে পড়া সহজে মনে থাকবে । চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে মানুষ কোন কিছুর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করলে তা সহজেই মস্তিষ্কে মেমোরি বা স্মৃতি তে রুপান্তরিত হয়ে যায়। স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয় ।
লক্ষ স্থির করুন.
মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল হলো পড়তে বসার পর নিজের লক্ষ্য স্থির করুন। বইয়ে কত পাতা পর্যন্ত কত সময়ের মধ্যে শেষ করবেন তা ঠিক করে নিন। নয়তো মনোযোগ হারাবেন এবং সময়ের অপচয় হবে।
জোরে জোরে পড়ুন
আমাদের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন তা বারবার ইনপুট দেয়া হয়। বারবার ইনপুট দেয়ার ফলে ব্রেনের স্মৃতি গঠনের স্থানে গাঠনিক পরিবর্তন হয় । যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরিতে সাহায্য করে ।
তাই বেশি বেশি পড়ার পাশাপাশি জোরালো কন্ঠে পড়ুন। জোরে পড়লে ব্রেনের সেলগুলো উদ্দীপিত হয় এবং তথ্য দ্রুত তাতে ঢুকে যায়। যেমন আমরা যখন কোন একটি গান শুনি তখন তো একটু জোরে শুনে থাকি। তখন দেখা যায় যে পরবর্তীতে তা আমাদের দ্রুত মনে পড়ে যায়।
লিখে লিখে পড়ুন
কোন জিনিস পড়ার সাথে সাথে লিখলে বা ছবি আকলে পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় ।কারণ নিউরোসায়েন্সের মধ্যে কিছু লিখলে ছবি আকলে ব্রেইনের অধিকাংশ জায়গায় উদ্দীপিত হয় এবং ছবি বা লেখাটিকে স্থায়ী মেমোরি তে রূপান্তরিত করে ফেলে। ফলে মস্তিষ্কে দীর্ঘস্থায়ী হয় তাই যায় শিখবেন তার সাথে সাথে লিখে ফেলুন এবং নোট করুন।
কালারিং বা মার্কার পেন ব্যবহার
কালারিং বা মার্কার পেন ব্যবহার করে দাগিয়ে পড়া । আমাদের মধ্যে অনেকেই মার্ক করে বাঁ দাগিয়ে পড়ে। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ কার্যকর একটা কৌশল মাত্র ।ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়।
পড়তে বসার আগে হাঁটুন
পড়তে বসার আগে ও মাঝখানে হাঁটুন । পড়ার টেবিলে বসার পুর্বে ১০ মিনিট হাটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।
আরও পড়ুন: পড়া দ্রুত শেষ করার উপায় ১০ টি বৈজ্ঞানিক কৌশল
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দেখা গেছে পড়ার পূর্বে১০ মিনিট হাটলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে একটু হাঁটার পরেই শুরু হোক পড়ালেখা। একটানা অনেকক্ষণ পড়লে অস্থিরতা চলে আসবে।
টেবিল আকারে বা কল্পনায় পড়া
আমাদের ব্রেইন অগোছালো জিনিস মনে রাখতে পারে না। তাই কোন কিছু ছক বা টেবিল আকারের সাজিয়ে নিলে কিংবা কবিতার ছন্দ বানিয়ে পড়লে তার সহজে মনে রাখা যায়। অথবা যা পড়বেন তাকে আপনার ব্রেইনে কল্পনা করতে থাকুন দেখবেন পড়া সহজে মনে থাকবে ।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ব্রাঞ্চে কোন ইনফরমেশন বা তথ্যকে মেমোরি বা স্মৃতিতে পরিণত করে ঘুমানোর সময়। তাই মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল পড়া মনে রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো জরুরি। সাধারণত একজন সুস্থ ব্যক্তির দিনে আট ঘণ্টার মতো ঘুমানো উচিত । এর থেকে কম ঘুমালে পড়া মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়।
ইন্টারনেটের ব্যবহার
এই আধুনিক যুগে পড়াশোনার বড় সুবিধা দেয় ইন্টারনেট। বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে ধারণা দেয় যে বিষয়ে আপনি পড়ছেন তা সংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই হয়তো আপনার বইয়ে নেয়। এগুলো ইন্টারনেট থেকে দেখে নিন এতে ধারনা পরিষ্কার হবে।
নিজের পড়া যাচাইকরণ
একটা চ্যাপ্টার প্রশ্নের উত্তর দুই তিন বার পড়ার পর না দেখে পড়ার চেষ্টা করো। নিজে নিজে শিক্ষক হয়ে উঠুন কি পড়লেন কি মুখস্ত করলেন ইত্যাদি বুঝার চেষ্টা করুন ।প্রয়োজনে নিজের পরীক্ষা নেন । না দেখে একবার লিখার চেষ্টা করুন।
পড়া মুখস্ত বা মনে রাখার একটি কৌশল যা আপনার পুরাতন অভ্যাসকে বদলে দেবে। আপনার মুখস্থ করার ক্ষমতাকে অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে যদি আমার এই ট্রিক্সগুলো আপনাদের উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই লাইক বাটনে একটা ক্লিক করতে ভুলবেন না।
আরও পড়ুন: টেলিমেডিসিন কী । এর সম্পূর্ন পরিচিতি
মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল সর্বশেষ
আপনাদের মতামত অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে লিখে জানান । অবশ্যই মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল পোষ্টটি আপনার বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন যাতে তারাও এই পোষ্টটি থেকে উপকৃত হতে পারে ।
অবশ্যই ওয়েবসাইট সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না কারণ এই রকম আরো নতুন নতুন পোষ্ট নিয়ে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত ।

1 thought on “মেধাবী ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল”