...

আবু বকর রাঃ এর জীবনী । Hazrat Abu Bakar Siddiq Ra

218 views

আবু বকর রাঃ এর জীবনী আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আজ আমরা হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহুর জীবন কাহিনী জানাতে চলেছি। আশা করি আপনাদের সকলের ভাল লাগবে তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

আবু বকর রাঃ এর জীবনী

তিনি অত্যন্ত দয়ালু ও সহনশীল ছিলেন । হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন সম্মানিত কুরাইশ ব্যক্তিবর্গের অন্যতম জ্ঞান, মেধা , বুদ্ধি, বিচক্ষণতা সচ্চরিত্র তার জন্য আপামর মক্কাবাসীর শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন ।

জাহেলী যুগে মক্কাবাসীদের রক্তের ক্ষতিপূরণের সমুদয় অর্থ তার কাছে জমা হতো। আরববাসীর বংশ সংক্রান্ত জ্ঞানে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ । কাব্য প্রতিভা ছিল। অত্যন্ত বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল ভাষায় ছিলেন।

হযরত আবু বকর কোন গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন

হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু ৫৭২ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল আবু কোয়েফা এবং মায়ের নাম ছিল উম্মুল খায়ের সালমা। তার প্রকৃত নাম আব্দুল্লাহ।

হযরত আবু বকর রাঃ এর প্রকৃত নাম কি

আরবের রীতি অনুযায়ী তিনি তার ছেলের নাম বকর থেকে আবুবকর অর্থাৎ বকরের পিতা নামে পরিচিতি লাভ করেন। সিদ্দিক ছিল তার উপাধি। তিনি ছিলেন পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান। তিনি ছিলেন উজ্জ্বল গৌরবর্ণ , পাতলা ছিপছিপে, প্রশস্ত ললাট বিশিষ্ট ।

তিনি ছিলেন তার গোত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় বন্ধুবৎসল ও অমায়িক ব্যক্তি। তিনি ছিলেন ব্যবসায়ী, দানশীল ও চরিত্রবান । জাহিলি যুগের কখনো শরাব পান করেননি। তার অমায়িক মেলামেশা পাণ্ডিত্য ও ব্যাবসায়িক দক্ষতার কারণে অনেকে তার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করত ।

তার বাড়িতে প্রতিদিন মক্কার বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের নিয়মিত বৈঠক বসত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর নবুয়ত লাভের পর যখন মক্কায় হইচই পড়ে গেল মক্কার প্রভাবশালী ধ্বনি নেতৃবৃন্দ তার বিরোধীতা কোমর বেঁধে লেগে যায়।

হযরত আবু বকর রা কে ইসলামের ত্রাণকর্তা বলা হয় কেন

কেউ বা তাকে মাথা খারাপ, কেউ বা জিনে ধরা বলতে থাকে। নেতৃবৃন্দের ইঙ্গিতে ও তাদের দেখাদেখি সাধারণ লোকেরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়। কুরাইশদের ধনবান ও সম্মানী ব্যক্তি দের মধ্যে একমাত্র আবুবকর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সঙ্গ দেন।

তাকে সাহস দেন এবং বিনা দ্বিধায় তার নবুয়তের প্রতি ঈমান আনেন। এই প্রসঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, আমি যাকেই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছি একমাত্র আবুবকর ছাড়া প্রত্যেকের মধ্যে কিছু না কিছু দ্বিধার ভাব লক্ষ্য করেছি ।

আবুবকর হলেন বয়স্ক আজাদ লোকেদের মধ্যে প্রথম মুসলমান । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যখন নবুওতের প্রকাশ্য ঘোষণা দিলেন তখন আবু বকরের নিকট তখন ৪০ হাজার দিরহাম ছিল।

এই সময় তিনি ইসলামের জন্য তিনি তার সকল সম্পদ ওয়াকাফ করে দেন। কুরাইশদের যেসব দাস-দাসী ইসলাম গ্রহণের কারণে নিগৃহীত ও নির্যাতিত হচ্ছিল এই অর্থ তারা তিনি সেসব খরিদ করে মুক্ত করে দেন।

১৩ বছর পর যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সাথে তিনি মদীনা হিজরত করেন। তখন তার কাছে এ অর্থের মাত্র আড়াই হাজার অবশিষ্ট ছিল । অল্প দিনের মধ্যে অবশিষ্ট দিরহামগুলি ইসলামের জন্য দিলো।

আবু বকর রাঃ এর জীবনী :তাই পরবর্তীকালে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন আমি প্রতিটি মানুষের ইনসান পরিষদ করেছি। কিন্তু আবু বকরের ইহসান সমূহ এমন যে তা পরিশোধ করতে আমি অক্ষম। তার প্রতিদান আল্লাহ দিবেন।

কিসের জন্য সিদ্দিক উপাধি লাভ করেন

তিনি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর একজন ঘনিষ্ঠ সাহাবী ছিলেন তিনি পুরুষদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি যিনি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর দাবির সত্যতা নিশ্চিত বলে গ্রহণ করেন। এবং এভাবে সিদ্দিক উপাধি লাভ করেন।

তিনি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের সময় তার সহযাত্রী ছিলেন। তিনি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর একমাত্র সাহাবী। যিনি তার সাথে সেই সফরে গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।

মক্কায় উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহুর ওফাতের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বিমর্ষ দেখলেন অনন্ত নিষ্ঠা ও আদব সহকারি নিজের অল্প বয়স্ক কন্যা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সাথে বিয়ে দেন।

আবু বকর রাঃ এর জীবনী : বিদায় হজের পরে যখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দৈনন্দিন নামাজে ইমামতি করার নির্দেশ দেন।

হযরত আবু বকর রা কিভাবে খলিফা নির্বাচিত হন

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাই সালাম এর শোকাবহ বিদায়ের পর ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার প্রথম খলিফা নির্বাচিত হন। তাকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর আকস্মিক অদ্ভুত একটি অত্যন্ত সমস্যা-সংকট পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর বিদায় এর পর কিছু করতে অস্বীকার করে বসে। কেবল এই কারণে যে তাদের গোত্রীয় প্রধান মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের খলিফার প্রতি অনুগত থাকার আর প্রয়োজন মনে করেনি।

শুধু তাই নয় তারা বরং নবপ্রতিষ্ঠিত খিলাফত কে ধ্বংস করার লক্ষ্যে মদিনা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে থাকে। হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাদের অভিষিক্ত জানতে পেরে সৈনিক প্রেরণ করেন । তাদের বিদ্রোহ দমন করতে সক্ষম হন।

যাকাত দিতে অস্বীকার করা

হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বড় যে সমস্যার সম্মুখীন হন তারা ছিল যে বহু লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করে ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চাহিদা পূরণ এবং দারিদ্র তত্ববধায়ন জন্য অপরিহার্য ছিল।

তখন হযরত আবুবকর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো যে প্রতিটি সক্ষম ব্যক্তিকে যাকাত দিতে হবে এবং তিনি এই লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন ।সবচেয়ে ভয়াবহ সমস্যা এই ছিল যে কিছু সংখ্যক উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তি মিথ্যা নবুওতের দাবি করে বসে ।

মিথ্যা নবুওতের দাবি

ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে ।  হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এইসব বিদ্রোহী মিথ্যা নবুওতের দাবি কারকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।রসদের স্বল্পতা সত্বেও আল্লাহতালা তাকে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেন।

তার খেলাফতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের একটি লক্ষ্য হলো পবিত্র কুরআনকে একই স্থানে সংগৃহীত করা। যদিও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সয়ং পবিত্র কুরআনের লিখন বিন্যস্তকরন কাজ সু-সম্পন্ন করেছিলেন।

রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার জীবনের শেষ দিনগুলোতে রোমানদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করার জন্য এক সৈন্য বাহিনী প্রস্তুত করেছিলেন। যারা উত্তর সীমান্তে উপদ্রব করেছিল ।

এই সৈন্যবাহিনী তখনও মদিনাতে অবস্থান করেছিল। যখন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সালাম পরলোক গমন করে গেলেন তখন হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু খলিফা হওয়ার পর মদিনার ভিতরে এবং বাইরে অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ল।

এই বিপদের আশঙ্কা করে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর অনেক সাহাবী তাকে এই পরামর্শ দিলেন যেন এই সৈন্যবাহিনী রোমানদের বিরুদ্ধে তখনই পেরন করা না হয়।

আবু বকর রাঃ এর জীবনী: কিন্তু হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর সাথে জবাব দিলেন আবু কোয়াফা পুএর  কি অধিকার আছে যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর দ্বারা সূচিত কোন কাজ কে রোধ করে।

মুসলিম সেনারা হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু নেতৃত্বে বাহারাইনে এক বিদ্রোহকে নাস্তানাবুদ করে দেয়। তারপর পারস্যরা পরাজিত হয়। যারা বাহরাইনের বিদ্রোহীদের মদদ করছিল।

আবু বকর রাঃ এর জীবনী :মুসলিম সেনাবাহিনী অতঃপর  ইয়ারমুকের যুদ্ধের রোমান পড়া শক্তিকে পরাজিত করে এবং এভাবে গোটা সিরিয়া ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তিনি দুই বছরের কিছু অধিককাল খিলাফতের মসনদে অধিষ্ঠিত ছিলেন

হযরত আবু বকর রাঃ এর মৃত্যু

হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু পক্ষকাল অসুস্থ থাকার পর ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ আগস্ট পরলোকগমন করেন। তিনি ছিলেন সেই দশ আশীর্বাদপুষ্ট একজন যাদেরকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সুসংবাদ দিয়েছিলেন যে তাদের জান্নাতে ভূষিত করা হবে।

আবু বকর রাঃ এর জীবনী সর্বশেষ

বন্ধুরা আজ তাহলে এ পর্যন্তই আপনারা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ ।

BloginfoBD

আমি মোঃ সজিব মিয়া । কাজ করছি Bloginfobd, FST Bazar, FST IT , FST Telecom ওয়েবসাইটে ।


1 thought on “আবু বকর রাঃ এর জীবনী । Hazrat Abu Bakar Siddiq Ra”

  1. সত্যিই আপনাদের পোষ্টগুলো অনেক সুন্দর এবং শিক্ষনীয়। অনেক অজানা তথ্য জানতে ও শিখতে পারলাম। এ রকম আরও সুন্দর সুন্দর পোষ্ট দেখতে চাই্।

    Reply

Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.