অনেকের সহজে অনেক কিছু মনে থাকে না। ফলে মনে করে স্মৃতিশক্তি বুঝি আমার একটু কম। এছাড়াও কেউ প্রশ্ন করলে দ্রুত তার জবাব দিতে পারে না । এই সমস্যায় আমরা সবাই কমবেশি পড়ে থাকি।
কিন্তু আমরা যদি কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে পারি। তাহলে খুব সহজেই আপনি আগের চেয়ে আরো বেশি মনে রাখতে পারবেন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক। আজকের পোস্ট আলোচনার বিষয় কিভাবে আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করবেন।
১.নিয়মিত ব্যায়ামে মস্তিষ্কের স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করে
ব্যায়ামের ফলে আমাদের মগজে বেশি হারে অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ সরবরাহ হয়। ফলে আপনার আরো বেশি আগের চেয়ে কাজ করতে পারি। এছাড়াও আপনি যদি খোলা জায়গায় ব্যায়াম করেন। তাহলে আপনি সূর্যের আলো থেকে বাড়তি ভিটামিন ডি পাবেন।
ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে।যে ব্যায়ামটি আপনি করছেন অবশ্যই তা উপভোগ করতে পারেন। ধরুন আপনি শরীরচর্চার জন্য বিভিন্ন নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যেতে পারেন।
আবার কোন কিছু শখ যেমন বাগান করা তাহলে বাগানের মধ্যেও আপনি নিয়মিত ঘুরতে পারেন এইভাবে আপনি যে কোন কিছু করতে ভালো লাগে সেটির উপর আকর্ষণ অনুভব করে আপনার ব্যায়াম করতে পারেন।
২. হাঁটাচলায় স্মৃতিশক্তি বাড়ে
অনেক গবেষণায় এটি প্রমাণিত যে, আপনি যদি কোনোকিছু হেঁটে হেঁটে মুখস্থ করার চেষ্টা করেন তাহলে সেটা বহুদিন ধরেই আপনার স্মৃতিতে আটকে থাকে।
এছাড়াও আপনি যদি পড়া শুরু করার আগে ১০ মিনিট হেঁটে আসেন। তাহলে আপনার মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা আগের চেয়ে একটু বৃদ্ধি পাবে এবং এটি স্মরণ করে রাখতে অনেক সাহায্য করে।
৩.স্মৃতিশক্তি শক্তির জন্য বেছে নিন সঠিক খাবার
আপনার খাবারের ২০ ভাগ খাবার আপনার মস্তিষ্ক যায়। মস্তিষ্কের কাজের পুরোটাই নির্ভর করে গ্লুকোজের মাত্রা উপর। তাই আপনার যদি গ্লুকোজের মাত্রা শরীরে কম থাকে তাহলে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা।
যেসব খাবার আমরা খুব বেশি পছন্দ করি সেইসব খাবারগুলো আমাদের মস্তিষ্কে রিওয়ার্ড এরিয়ার ডোপামিন রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ে ফলে আমরা খুশি খুশি অনুভব হয়। তাই মস্তিস্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের খাবারের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।
আমাদের পরিপাকতন্ত্রে অনেক অনুজীব বসবাস করে যারা আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গেও সংযোগ করে থাকে। তাই মগজ এর সাথে অবশ্যই আপনার পেটের ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে।
৪. নিয়ে নিন অবসর
মানসিক চাপ সবারই কম বেশি থাকে। মানসিক চাপ যতই কম থাকে ততই ভালো। কেননা মানসিক চাপ থাকলে মানুষ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে দ্রুত মোকাবেলার শক্তি পায়। হরমোনের কারণে দেহ মন চাঙ্গা হয় মনোযোগের ক্ষমতা বাড়ে।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপ ও মস্তিষ্কের জন্য খুবই খারাপ। সুতরাং কাজের ফাঁকে ফাঁকে অবসর সময় বের করা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার মস্তিষ্কের অবসর দিয়ে নিজেকে মূলত সুইচ অফ করে রাখবেন যেটি আপনার মস্তিষ্কের বিভিন্ন কাজকে আরও বৃদ্ধি করতে পারে।
৫. নতুন কিছু করতে থাকুন
আপনি যদি নিয়মিত নতুন নতুন কিছু তৈরি করতে পারেন ।তাহলে আপনি আপনার মস্তিষ্কের আরো কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন জিনিস যেমন ছবি আঁকা বা বিদেশী ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে কি করা সম্ভব।
৬. বিছানায় শুয়ে পরীক্ষার পড়া
দিনের বেলায় আমরা যখন পড়তে বসি। তখন আপনার মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষের সাথে আরও একটি স্নায়ু কোষের যুক্ত হয়। ফলে আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন তখন সেই সংযুক্তি আরো বেশি হয়। আপনি দিনে যা শিখেছেন তা আপনার স্মৃতিতে জমা হতে থাকে।
আপনি যদি সবার আগে কাউকে একটা লিস্ট দিয়ে বলেন সেটা মুখস্থ করতে।তাহলে পরদিন সকালে এসে সেটা খুব সহজেই মনে করতে পারে। কিন্তু এটি যদি সন্ধ্যার সময় মুখস্ত করতে বলেন তাহলে সেটা মনে করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে।
তাই দুঃখের স্মৃতি নিয়ে সবার সময় চিন্তাভাবনা না করাই ভালো এতে মস্তিষ্কের ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই সবার আগে ভূতের ছবি দেখা ভালো নয়। এর বদলে আপনি যেই ভালো ঘটনা ঘটেছে সে বিষয় নিয়ে চিন্তা করে ঘুমিয়ে পড়ুন। এতে আপনার ঘুম ভালো হবে।
৮. ঘুম
ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি জানি। কারণ আপনি যদি নিয়মিত ঘুমাতে পারেন আপনার মস্তিষ্ক সহ আপনার শরীর ক্লান্ত হয়ে যাবে। তাই আপনি যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমাতে না পারেন তাহলে আপনার স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে।
আমাদের সবচেয়ে ভালো ঘুম হয় ঘর অন্ধকার থাকলে এবং দিনের আলো উঠার সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায়। কাটিসল হরমোন আপনার দেহে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে আপনি জেগে ওঠেন। ফলে আপনি আপনার দিনটি কেমন যাবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে।
আজকের পোষ্টে স্মৃতিশক্তি বা মস্তিষ্ক ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।যেটি অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি আপনার স্মৃতিশক্তি কে বাড়াতে পারেন।
পোস্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং প্রতিদিন ব্লগইনফো বিডি ভিজিট করবেন কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।