ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ: ডেঙ্গু খুবই মারাত্মক একটি রোগ। কেননা এখনো পর্যন্ত এই রোগের কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। আমাদের দেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে কখনও অল্প আবার কখনো মুষলধারা বৃষ্টি হয়।
সে কারণে এই সময়ের আবহাওয়া অনেক আদ্র থাকে। আর এই আবহাওয়ায় ডেঙ্গু বাহক এডিস মশা খুব সহজেই বংশবিস্তার করতে পারে। এজন্য এই সময়কে ডেঙ্গু জ্বরের মেীসুম বলা হয়ে থাকে। আজকের পোষ্টে আমরা জানবো ডেঙ্গু জ্বর কেন হয় এর লক্ষণ কি?
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
ডেঙ্গুজ্বর একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। এটি সংক্রমিত হয় মশার মাধ্যমে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী এডিস মশা যদি কোন ব্যক্তিকে কামড়ায় তাহলে সেই ব্যক্তি ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হয়।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে যদি কোন জীবাণু বিহীন এডিস মশা কামড়ায় তাহলে সেই মশার ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশাই পরিণত হয় । এভাবেই মশার মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজন ব্যক্তির মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
সংক্রামিত মশার কামড়ের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রতিবছরই আনুমানিক ৪০০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়। আমাদের দেশে এই রোগের প্রথম আবির্ভাব ঘটে ১৯৬০ সালে। সেই সময় এটিকে ঢাকা জ্বর বলা হতো পরবর্তীতে ২০০০ সালে পুনরায় আবার এই রোগে আক্রান্ত হয় অনেক মানুষ।
এরপর থেকে প্রতিবছরই আমাদের দেশে কোন না কোন ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হয়। তবে ২০০৯ সালে আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। ডেঙ্গু ভাইরাস প্রধানত চার ধরনের।
কোন ব্যক্তি যদি কোন একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তবে সেই রোগ থেকে সেরে ওঠার পর ওই ব্যক্তি সেই টাইপের ভাইরাসের বিরুদ্ধে সারা জীবনের জন্য রোগ প্রতিরোধের শক্তি লাভ করে। অন্য টাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক রোগ প্রতিরোধ শক্তি লাভ করে।
তাই কেউ যদি যেকোনো এক টাইপের ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে পরের বার অন্য টাইপের ভাইরাস দ্বারা আবারো আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেহেতু কারো যদি একবার ডেঙ্গু হয় তাহলে তার আরও তিনবার ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডেঙ্গুজ্বর প্রকারভেদ
ডেঙ্গুজ্বর প্রধানত দুই ধরনের একটি হলো ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর এবং অন্যটি হলো হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর। আর এই দুই ধরনের জ্বরের লক্ষণ সম্পূর্ন আলাদা । ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরে তীব্র জ্বরের সাথে বিভিন্ন স্থানে প্রচন্ড ব্যথা হয়।
কোন কোন সময় জ্বরের মাত্রা ১০৫ ফারেনহাইট ছড়িয়ে যায়। এছাড়া কোমর মাংসপেশি মাথায় ও চোখের পেছনে তীব্র ব্যথা হয়। অনেক সময় ব্যথার মাত্রা এতটাই তীব্র আকার ধারণ করে যে মনে হয় শরীরের সমস্ত হাড় গুলোর ভেঙে যাচ্ছে । এজন্য এই জ্বরকে ব্রেক বোন ফিভার বলা হয়ে থাকে ।
এছাড়া জ্বরের তিন-চারদিন পর রোগীর সারা শরীরে লালচে দানা যুক্ত এলার্জি বা ঘামাচি দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি রোগীর বমি বমি ভাব এমনকি বমিও হতে পারে। খাওয়া দাওয়া রুচি কমে যেতে। পারে কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে জোট সম্পূর্ণভাবে সেরে গিয়ে দু-তিন দিন পর আবারও তীব্র জ্বর হতে পারে ।
অপরদিকে হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। এই জ্বর কারণে রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন চামড়ার নিচে চোখের মধ্যে চোখের বাইরে নাক-মুখ দাঁতের মাড়ি কিংবা কফের সাথে রক্ত বের হয়।
এছাড়া কালো পায়খানা সহ পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত বের হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে অসময়ে ঋতুস্রাব হতে পারে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ অনেকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। অনেক ক্ষেত্রে লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগের জন্ডিস হতে পারে।
আরও পড়ুন:মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় -মনে না থাকার কারণ
আবার অনেকের কিডনি আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেলার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই নিজে নিজেই সেরে যায় ।
ডেঙ্গু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
এ রোগ হলে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে যেমন সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার যেমন পানি শরবত ডাবের পানি এবং খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ সর্বশেষ
আজকের পোষ্টটি ভালো লাগলে লাইক এবং শেয়ার করতে ভুলবেন দেখা হবে পরবর্তী পোষ্টটি সে পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ